• আচমকা নো-এন্ট্রি, সংবাদমাধ্যমের উপর পুলিশের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ
    বর্তমান | ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: শনিবার থেকেই জনস্রোতে ভাসছে বারাসত ও মধ্যমগ্রাম। কালীপুজোর ভিড় সামাল দিতে গিয়ে পুলিশ অতিসক্রিয় হয়ে ওঠায় নাজেহাল অবস্থা বাসিন্দাদের। শুধু তাই নয়, এবার সংবাদমাধ্যমের কাজের উপরও কার্যত ‘হস্তক্ষেপ’ করার অভিযোগ উঠছে পুলিশের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে রীতিমতো অসন্তুষ্ট সাংবাদিক মহল।

    ১৭ অক্টোবর পুজোর উদ্বোধনের দিন থেকেই বারাসত ও মধ্যমগ্রামে দর্শনার্থীদের ভিড় শুরু হয়েছে। শনিবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যেখানে প্রায় এক ঘণ্টা রাস্তায় যানজটে আটকে ছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। শেষমেশ তিনি হেঁটে পুজো উদ্বোধন করতে যান। স্বাভাবিকভাবে মন্ত্রীর এভাবে আটকে থাকার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কয়েকদিন আগে সাংবাদিক বৈঠক করে বারাসত পুলিশ জেলার সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খারিয়া বলেছিলেন, ২০ তারিখ কালীপুজো। সেইদিনই নো-এন্ট্রি করা হবে। কিন্তু তার আগের দিন রাত থেকেই কার্যত শহরজুড়ে তাণ্ডব চালাল পুলিশ, এমনটাই অভিযোগ শহরবাসীর। সংকীর্ণ ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি কোথাও কোথাও ব্যারিকেড দিয়ে তা অর্ধেক করে দেওয়া হয়েছে। আচমকা নো-এন্ট্রি করায় চূড়ান্ত নাকাল হতে হয়েছে মানুষকে। পুলিশ সুপার জানিয়েছিলেন, পুজোর সমস্ত আপডেট ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। কিন্তু কবে থেকে নো-এন্ট্রি চালু হবে, তা নিয়ে কোনও স্পষ্ট তথ্য পুলিশের ওয়েবসাইটে নেই। ফলে পুলিশের খামখেয়ালিপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। 

    অতীতে বারাসতের কালীপুজো জন্য সাংবাদিকদের পাস দেওয়া হতো। কিন্তু এবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রেস ব্যুরো বা ডিস্ট্রিক্ট প্রেস ক্লাব কাউকেই সেই পাস দেওয়া হয়নি। এবার পুলিশ হঠাৎ ফতোয়া জারি করেছে, যাঁদের অ্যাক্রিডেশন কার্ড রয়েছে, একমাত্র তাঁদেরই পুজো কভার করতে দেওয়া হবে। তাঁরাই পাবেন পুলিশের পাস। নির্দিষ্ট গাইড দেওয়া হবে বলেই পুলিশ সাংবাদিকদের জানিয়েছে। অর্থাৎ, সাংবাদিকরা নিজেদের মতো করে খবর সংগ্রহ করতে পারবেন না। তাহলে কি ব্যর্থতা ঢাকতেই সাংবাদিকদের আটকে দিচ্ছে পুলিশ, এই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে শহরে।এ নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রেস ব্যুরোর সভাপতি অভ্রনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, বারাসতে কালীপুজোর খ্যাতি দীর্ঘদিনের। পেশাগত কারণেই পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিকদের একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এবার পুলিশ যা বজ্রআঁটুনি করেছে, তাতে সাংবাদিক মহল অসম্মানিত। ডিস্ট্রিক্ট প্রেস ক্লাবের সভাপতি অভয় নাগ বলেন, পুলিশের এই কাজের আমরা তীব্র প্রতিবাদ করছি। এভাবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যায় না। বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার অতীশ বিশ্বাস বলেন, এসপি ম্যাডাম সাংবাদিক বৈঠকে বলে দিয়েছিলেন যে, ১৯ তারিখ থেকেই নো-এন্ট্রি করা হবে। সেটা হয়তো মানুষ বা সংবাদমাধ্যমের বুঝতে ভুল হয়েছে। তবে সাংবাদিকদের পাস প্রসঙ্গে নীরব থেকেছেন তিনি।
  • Link to this news (বর্তমান)