স্বাধীনতার ৭৮ বছর পর দেশের প্রথম চরম দারিদ্রমুক্ত রাজ্য, ইতিহাস লিখল বামশাসিত কেরল
প্রতিদিন | ২০ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিক্ষা, স্বাস্থ্যে নজির গড়ার পর এবার এক অনন্য সাফল্য বামশাসিত কেরলের ঝুলিতে। স্বাধীনতার ৭৮ বছর পর কেরল হতে চলেছে দেশের প্রথম রাজ্য যেখানে চরম দারিদ্রসীমার নীচে থাকবেন না এক জনও। আগামী নভেম্বর মাসে কেরলকে চরম দারিদ্রমুক্ত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিনারাই বিজয়ন সরকার।
নিজ রাজ্যকে দারিদ্রমুক্ত করতে এক্সট্রিম পভার্টি ইরাডিকেশন প্রজেক্ট’ (ইপিইপি) প্রকল্প চালু করেছিল কেরল সরকার। যার লক্ষ্য ছিল, রাজ্যে চরম দারিদ্রসীমার নিচে যারা বাস করছে সেইসব মানুষকে খুঁজে বের করে তাঁদের দুঃখ লাঘব করা। সেই মতো শুরু হয়েছিল কাজ। আশা কর্মীদের উদ্যোগে দুঃস্থ পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করা শুরু করে সরকার। সমস্যা দূরীকরণে নেওয়া হয় একাধিক পদক্ষেপ। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে গত কয়েক বছরে দারিদ্রসীমার নিচে থাকা ৬৪ হাজার ৬টি পরিবারকে ইপিএফের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়। তাঁদের মধ্যে মোট ১,০৩,০৯৯ জন নাগরিক এখন খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও নিরাপদ আশ্রয়ের সুযোগ পেয়েছেন। রাজ্যের মন্ত্রী এম বি রাজেশ জানিয়েছেন, “বর্তমান এলডিএফ সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এরপর গত পাঁচ বছরে দারিদ্র নির্মূলের লক্ষ্যে আমরা শতভাগ সাফল্য অর্জন করেছি।”
মন্ত্রী রাজেশ বলেন, এই পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করার পর বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের মাধ্যে এঁদের জীবনযাত্রা উন্নতির লক্ষ্য নেয় সরকার। ছোট ছোট প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁদের সমস্তরকম চাহিদা মেটানোর উপর জোর দেওয়া হয়। দেখা যায়, এঁদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ পরিবারের কোনও উপার্জন ছিল না। ২৪ শতাংশ পরিবার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছিল। ২১ শতাংশ পরিবারের দুবেলা খাওয়া জুটত না। ১৫ শতাংশ পরিবারের কোনও বাসস্থান ছিল না। ধাপে ধাপে এঁদের যাবতীয় সমস্যা মেটাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়। অবশেষে এই সাফল্য।
সংবাদমাধ্যমকে এই সুসংবাদ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “দেশের মধ্যে প্রথম দারিদ্রমুক্ত রাজ্য হতে চলেছে কেরল। এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়।” যদিও তিনি স্বীকার করেছেন, “৬০ হাজারের বেশি পরিবারকে দারিদ্র থেকে মুক্ত করা গেলেও ভবিষ্যতে নতুন পরিবার এই শ্রেণিতে পড়তে পারে। তাই সরকার এখন এই কর্মসূচির স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে নতুন প্রকল্প নিয়ে ভাবছে।” উল্লেখ্য, চিনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় রাজ্য হিসেবে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণে সাফল্যের দাবি করছে কেরল। ১ নভেম্বর, রাজ্য প্রতিষ্ঠা দিবসে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা করবে সরকার।