• বৃষ্টি কাঁটা, কালীপুজোয় মায়ের পায়ের জবা মহার্ঘ ১০ গুণ
    প্রতিদিন | ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • নব্যেন্দু হাজরা: আশঙ্কা ছিলই। আর হলও তাই। কালীপুজোর আগের রাতেই জবার দাম ১০ গুণ বেড়ে গিয়েছে। ১০৮ জবার মালা বহু বাজারে বিকোল ১৫০ টাকায়। দিন সাতেক আগেও পাইকারি বাজারে ১০০০ জবার কুঁড়ির দাম ছিল ৭০-৮০ টাকা, কিন্তু শুক্রবার থেকে আচমকাই তার দাম বেড়ে যায়। বিকোয় ৬০০-৭০০ টাকায়। আর রবিবার এই দাম আরও বেড়েছে। আজ পুজোর দিনও সেই দামই থাকবে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

    আজ রাজ্যে চাহিদা থাকে এক কোটি জবার। কিন্তু, একদিনে এত জবার জোগান সম্ভব নয় বলেই হিমঘরে একসপ্তাহ আগে থেকেই তা মজুত রাখা হয়। ফুলচাষিদের কথায়, আগে থেকে ফুল কিনে রাখলে লাভঅনেক বেশি। শুধু লাভই নয়, একদিনে এত জবার জোগান দেওয়াও সম্ভব হয় না। তাই হিমঘরে স্টক করে রাখা ‘বাসি’ ফুলই বিকোয় সর্বত্র। যাঁরা সেটাও পান না, তাঁদের প্লাস্টিকের জবাতেই ভক্তি নিবেদন করতে হয়। ফুলচাষিরা জানান, গত বর্ষায় ফুলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় কালীপুজোর আগে সমস্ত ফুলের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে গিয়েছে। নিম্নচাপের বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের ফুলচাষ হয়, এমন জেলাগুলির মধ্যে অন্যতম পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফুলের চাষ ভীষণভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছিল। ফলস্বরূপ দোপাটি-গাঁদা-অপরাজিতা-রজনীগন্ধা সহ বিভিন্ন ধরনের পাপড়িযুক্ত ঝুরো ফুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেইমতো ফুলের ঘাটতি থাকায় স্বাভাবিকভাবেই দাম বেড়েছে।

    রবিবারও কলকাতার মল্লিকঘাট, পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট-সহ অধিকাংশ ফুলবাজারে ফুলের বেশ চড়া দাম লক্ষ করা গিয়েছে। এদিন পাইকারি ফুলবাজারগুলিতে ঝুরো লাল গাঁদা ১৮০-২০০ টাকা, হলুদ গাঁদা ২১০-২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তিন ফুট সাইজের লম্বা লাল গাঁদাফুলের এক একটি মালা বিক্রি হয়েছে ৪০-৪ টাকায়। ওই একই সাইজের হলুদ গাঁদার এক-একটি মালা বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকায়। অন্যদিকে দোপাটি ঝুরো প্রতিকেজি দাম ছিল ১৫০টাকা, অপরাজিতার দাম ছিল ৫০০-৬০০ টাকা। এক কিলো রজনীগন্ধার দাম ছিল ৭০০-৮০০ টাকা। পদ্ম বিক্রি হয়েছে প্রতি পিস ২০-২৫ টাকা দরে। হাজার জবার কুঁড়ির দাম ছিল ১১০০-১২০০ টাকা। গোলাপ প্রতি পিস ৩ থেকে ৪ টাকা। সব মিলিয়ে ওই ফুলগুলোর দাম এদিন ছিল আকাশছোঁয়া।

    মূলত হাওড়ার বাগনান, কোলাঘাট, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর, পূর্ব মেদিনীপর, নদিয়া থেকেই ফুল আসে হাওড়ার ফুলবাজারে। তারপরই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তা নিয়ে যাওয়া হয়। ফুলচাষিদের কথায়, পুজোর সময় থেকেই দাম বাড়ে সব ফুলের। কোনওটার কম। কোনওটার বেশি। এবারও হয়েছে। জবার দামও প্রতিবারই এই দিন দুয়েকের জন্য বাড়ে কালীপুজোর সময়। সারা বাংলা ফুলচাষি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ণচন্দ্র নায়েক বলেন, “এই একটা দিনের জন্য জবার চাহিদা থাকে আকাশছোঁয়া। তবে অন্য ফুলও এবারের বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে। যে কারণে সব ফুলেরই দাম কালীপুজোয় চড়া।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)