• কালীপুজোর আগেই অবাধ শব্দ-দাপট
    আনন্দবাজার | ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • এ বারও শব্দবাজির দৌরাত্ম্যে লাগাম পরানো যে যাচ্ছে না তা কালীপুজোর আগের দিনই পরিষ্কার হয়ে গেল। বিধি উড়িয়ে কালীপুজোর দিন তিনেক আগেই কলকাতায় শব্দবাজির তাণ্ডব দেখা গিয়েছিল। রবিবারও তা বহাল থেকেছে। সন্ধ্যা থেকে মধ্য রাত তো কথাই নেই, দিনের বেলাতেও এ দিন বাজি ফেটেছে শহরের বহু এলাকায়। যা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, কালীপুজোর আগে এই অবস্থা হলে সোমবার ও মঙ্গলবার কী হবে? লালবাজারের যদিও দাবি, গত এক সপ্তাহের মতো এ দিন লাগাতার বেআইনি শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি ধরপাকড় চলেছে। বিভিন্ন বাজারে বাজারে চলেছে অভিযান। শনিবার পর্যন্ত ৪২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছেবলে জানায়।

    কলকাতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাজি ফেটেছে উত্তরবঙ্গেও। যেমন ভিড় দেখা গিয়েছে, তেমনই পুড়েছে শব্দবাজি। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার-মালদহ, ব্যতিক্রম হয়নি কোথাও। দেদার বাজি পোড়া শুরু হয় এ দিন সন্ধে থেকেই। নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিকট আওয়াজে ব্যতিব্যস্ত হতে হয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের অনেকের। অন্যত্র যেমন মেদিনীপুর শহরেও রাত বাড়তে বিক্ষিপ্ত ভাবে শব্দবাজির আওয়াজ মিলেছে। ঝাড়গ্রামে শব্দবাজি তেমন শোনা যায়নি। আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্প শহরেও সন্ধ্যায় সে ভাবে বাজি ফাটেনি। তবে রাতে ছবিটা পাল্টায়।

    উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর, আমডাঙা, দেগঙ্গায় ভালই বাজি ফেটেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ ও ক্যানিং মহকুমা এলাকায় দাপট খানিক কম। হুগলি শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন শহরে কয়েক দিন ধরেই বিক্ষিপ্ত ভাবে বাজি ফাটছে। কালীপুজোর আগের দিনও তার অন্যথা হয়নি। চন্দননগরের বারাসত জেলেপাড়ার এক প্রবীণ বাসিন্দার কথায়, ‘‘সকাল থেকে রাত, মাঝেমধ্যেই বাজির আওয়াজ কানে আসছে। এ থেকে কী নিস্তার নেই!’’ আরামবাগ মহকুমার নানা জায়গাতেও বাজি ফেটেছে। পুরুলিয়ার আদ্রা, রঘুনাথপুর, বাঁকুড়ার সোনামুখী-সহ কিছু এলাকায় এ দিন সন্ধ্যা থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু শব্দবাজি ফাটে। নদিয়ার ধানতলা, রানাঘাট, কুপার্স, আড়ংঘাটা, গয়েশপুরে রাত বাড়ার সঙ্গে নিষিদ্ধ বাজির দাপট বেড়েছে। তবে তা অন্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম বলে দাবি বাসিন্দাদের। বোলপুরে মাঝে মাঝে কিছু বাজি ফাটলেও, বীরভূমে জেলার অন্যত্রশব্দবাজি ফাটেনি।

    সব মিলিয়ে গ্রামাঞ্চলের থেকে শহরেই বাজির দাপট ঢের বেশি বলে লোকে টের পেয়েছে। কলকাতায় বেহালা, সরশুনা, পাটুলি, উল্টোডাঙা, ফুলবাগান এলাকায় পাড়ার ভিতর বিভিন্ন বাজারে কার্যত প্রকাশ্যে দেদার শব্দবাজি বিক্রি হয়েছে বলে অভিযোগ। বহু জায়গায় কার্যত পুলিশের নাকের ডগাতেই বাজি ফাটাতে দেখা গেলেও আইনরক্ষকদের কোনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। পুলিশের একাংশের এই গা-ছাড়া ভাব বাজির দৌরাত্ম্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শহরের সচেতন নাগরিকদের
  • Link to this news (আনন্দবাজার)