• ১০৯ বছরে পড়ল হ্যামিল্টনগঞ্জের পুজো, জাঁকজমকপূর্ণ মেলায় থাকছে সার্কাসও
    বর্তমান | ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: ডুয়ার্সে চা গাছের গোড়াপত্তন হয়েছিল ইংরেজ বণিকদের হাত ধরে। তখন ইংরেজ সাহেবরা অনেকে চা বাগানের ম্যানেজারও ছিলেন। তেমনই মেচপাড়া চা বাগানের ম্যানেজার ছিলেন ইংরেজ সাহেব হ্যামিল্টন।তখন ইংরেজ চা বণিকরা অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির মতো অনেকেই কালীর ভক্ত ছিলেন। তার প্রমাণও মেলে হ্যামিল্টনগঞ্জের বিখ্যাত কালীপুজো ও মেলায়। স্হানীয় বাঙালিবাবুদের নিয়ে মেচপাড়া বাগানের এই হ্যামিল্টন সাহেবের পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হয়েছিল আজকের এই হ্যামিল্টনগঞ্জের কালীপুজো। এই ইংরেজ সাহেবের নামেই নামকরণ হয়েছিল আজকের হ্যামিল্টনগঞ্জ স্টেশনের নাম।ইংরেজ আমলে শুরু হওয়া এই হ্যামিল্টনগঞ্জের কালীপুজো এবছর ১০৯ বছরে পড়ল। সেই পুজোর প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। ইংরেজ আমলে এই হ্যামিল্টগঞ্জের কালীপুজো হত কাঠের মন্দিরে। ২০০২ সালে কাঠের বদলে মায়ের পাকা মন্দির তৈরি করা হয়। একই সময়ে মাটির মুর্তির বদলে নিকষ কালো রংয়ের কষ্ঠি পাথরের মুর্তি স্হাপন করা হয়। ৮৪ হাজার টাকায় এই পাথরের মুর্তি কিনে আনা হয়েছিল রাজস্হানের জয়পুর থেকে।জনশ্রুতি আছে যে, হ্যামিল্টনগঞ্জের কালীপুজোর রাতে ইংরেজ বণিকরা ও সাহেবরা মোরগ লড়াইয়ের আয়োজন করত। পুজোর পর মোরগ জবাই হত। মোরগের মাংসের ভোজ হত। ভোজনের পর ধামসা মাদলের দ্রিমি দ্রিমি তালে ইংরেজ বণিকরা রাতভর ঢুলুঢুলু চোখে নাচত। সেই নাচে যোগ দিত বাঙালিবাবু ও আদিবাসী চা শ্রমিকরাও।পুজোর পর হ্যামিল্টনগঞ্জ ফুটবল মাঠে এবছরও জমজমাট মেলা বসছে। হ্যামিল্টনগঞ্জ কালীবাড়ি মন্দির কমিটির সম্পাদক ও মেলা কমিটির সভাপতি সঞ্জয় মুখোাপাধ্যায় বলেন, “পুজো উপলক্ষ্যে মেলা শুরু হবে মঙ্গলবার ২১ অক্টোবর থেকে। মেলা চলবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত। এবারের মেলায় সার্কাসও থাকছে। ইতিমধ্যেই সার্কাসের তাবু পড়েছে মাঠে।”নিম্ন অসম, তরাই ও ডুয়ার্স সহ প্রতিবেশী দেশ ভুটানের হাজার হাজার ভক্ত হ্যামিল্টনগঞ্জের কালীপুজোর মেলায় যোগ দেয়। মেলায় প্রতি বছর কাশ্মীরী শাল বিক্রেতারা শীতের গরম পোশাক নিয়ে হাজির হয়। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এবারও মেলায় কাশ্মীরী শাল বিক্রেতারা আসছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)