• কালীপুজোর সকালে তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের চেষ্টা! রক্তে ভাসল রাস্তা...ভয়ংকর বিধাননগর...
    ২৪ ঘন্টা | ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • নান্টু হাজরা ও মৌমিতা চক্রবর্তী:  বিধান নগর পৌর নিগমের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর নির্মল দত্তকে গুলি করে খুনের চেষ্টা। অভিযোগ, নির্মল হাত ধরে ফেললে, দুষ্কৃতির সাথে ধস্তাধস্তি হয়। অভিযুক্ত বন্দুকের বাট দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করেন। তার পরে তিনি পালিয়ে যান। ঘটনার তদন্তে নেমেছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিস। নির্মলকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি বিধান নগর আইএনটিটিইউসির সভাপতি।

    সোমবার সকাল সাতটা নাগাদ নির্মল দত্ত, যখন তাঁর নিজের ওয়ার্ড অফিসের তালা খুলতে যান, অভিযোগ সেই সময় পিছন থেকে এক ব্যক্তি মাস্ক পড়া অবস্থায় তাকে গুলি করতে যায়। কোন রকমে তার হাত ধরে ফেলেন এবং সেই সময় তার সাথে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। অভিযুক্ত ওই অজ্ঞাত পরিচয় যুবক বন্ধুকের বাট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি নিচে লুটিয়ে পড়েন। চিৎকার শুনে এলাকায় লোকেরা ছুটে আসলে ওই দুষ্কৃতী পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় বিধান নগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নির্মল দত্তকে। অভিযুক্তর খোঁজে রাস্তা সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কী কারণে হামলা সেই বিষয়ে খতিয়ে দেখছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিস।

    এই ভয়াবহ ঘটনার পর আক্রান্ত কাউন্সিলর নির্মল দত্ত জানিয়েছেন, 'জীবনটা চলে যেতে।সামনে থেকে মৃত্যু দেখলাম। এখনো কিছু বুঝে উঠতে পারছিনা। বন্দুকের বাট দিয়ে মেরেছে'। 

    'এলাকায় কোনও বেআইনি কাজ করতে দিইনা, ৬৪ পুকুর ভরাট হতে দিইনা তাই কি আমি টার্গেট'? প্রশ্ন আক্রান্তের।

    আমার ওপর এর আগেও আক্রমন হয়েছে। প্রশাসন চাইলে আটকাতে পারে। মমতা বন্দোপাধ্যায় দেখুন আমি তৃণমূল স্তরের একজন কর্মী। হাতজোর করে বললেন প্রাক্তন কাউন্সিলর নির্মল।

    ওয়ার্ড অফিসের সামনে চাপ চাপ রক্তের দাগ এখনও। বর্তমানে তার স্ত্রী আলো দত্ত ওই ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলর।

    এলাকা জুড়ে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে অভিযুক্তের গতিবিধি ও পরিচয় শনাক্তের জন্য। কেন এই হামলা, রাজনৈতিক নাকি ব্যক্তিগত কারণে— তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

    দিনদুপুরে এমন হামলায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিধাননগর জুড়ে। স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় বাড়ানো হোক নিরাপত্তা। অন্যদিকে, এই ঘটনায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত দোষীদের গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন। প্রশ্ন উঠছে— রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, নাকি অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে এই গুলি করার চেষ্টার পেছনে?

    স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় আরও নজরদারি বাড়ানো উচিত পুলিসের। সম্প্রতি গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে অন্য রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা দুষ্কৃতীদের ধরতে বিধাননগরে অভিযান চালায় কলকাতা পুলিস। 

    সেইসময় বিধাননগরের একাধিক জায়গায় পালিয়ে আসা ভিন রাজ্যের চার দুষ্কৃতীকে ধরতে গিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল গোটা এলাকায়। কলকাতা পুলিসের  তৎপরতায় ধরা পড়ে তিন অভিযুক্ত।  

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছিল, গোপন সূত্রে খবর আসে গুজরাটের এক অপরাধচক্রের চার সদস্য কলকাতায় আত্মগোপন করে আছে। সেই খবরের সূত্র ধরে অভিযান শুরু করেছিল কলকাতা পুলিসের একটি বিশেষ দল। বিধাননগরের একটি পাঁচ তারা হোটেলের কাছ থেকে প্রথমে দু'জন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়। কিন্তু বাকি দু'জন পালিয়ে যায়। তাদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু হয় সঙ্গে সঙ্গেই।

    অভিযান চলাকালীন জানা যায়, এক অভিযুক্ত পূর্বাচল আবাসনের ক্লাস্টার ফোর-এর ছাদের কার্নিসে লুকিয়ে রয়েছে। পুলিসে সেখানে পৌঁছলে  সুযোগ বুঝে সে পালানোর চেষ্টা করে। এরপর সে দৌড়ে একটি সরকারি আবাসনে ঢুকে পড়ে। কিন্তু সেখানে নিরাপত্তারক্ষীরা তার গতিবিধি টের পেয়ে ধাওয়া করে। অবশেষে বেঙ্গল টেনিস অ্যাকাডেমির কাছে তাকে পাকড়াও করে কলকাতা পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)