• দুর্গাপুর ‘ধর্ষণ’ কাণ্ডে পাঁচদিন টানা জেরা, সহপাঠী ও পাঁচ যুবকের বয়ানে বিস্তর ফারাক!
    প্রতিদিন | ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • সুদীপ বন্দ্যোপাধ‌্যায়, দুর্গাপুর: হেফাজতে নিয়ে পাঁচদিন ধরে জেরার পরও সহপাঠী ও গ্রামের পাঁচ যুবকের বয়ানে বিস্তর ফারাক। এখনও মিসিং লিঙ্ক খোঁজার চেষ্টা পুলিশের। ১০ অক্টোবর রাতে দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক‌্যালের ছাত্রী সহপাঠীর সঙ্গে বেরিয়ে ‘ধর্ষণে’র শিকার হন। প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় এলাকার পাঁচ যুবককে। পরে গ্রেপ্তার হন সহপাঠী ছাত্রও। পুলিশি তদন্তে উঠে আসে সহপাঠীর সঙ্গে ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। জঙ্গলে গিয়ে তাঁরা ঘনিষ্ঠ অবস্থায় ছিলেন। এলাকার যুবকরা দেখতে পেয়ে তাঁদের মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। এরপরই ধর্ষণের গল্প ফাঁদেন ডাক্তারি ছাত্রী ও সহপাঠী ছাত্র।

    প্রথম দিন থেকেই ডাক্তারি ছাত্রী সহপাঠী ওয়াসিফ আলি পুলিশকে মিসগাইড করেছেন। তাতে তদন্তে নেমে বিভ্রান্তিতে পড়তে হয় পুলিশকে। ঘটনার দিন মালদহের ওই সহপাঠী ছাত্রর সঙ্গেই ডাক্তারি ছাত্রী হাসপাতাল ক্যাম্পাসের বাইরে বের হন। কলেজ সূত্রের খবর, ওই রাতে ৭.৫৮ মিনিটে ছাত্রী ও সহপাঠী ছাত্র দু’জনে একসঙ্গে ক‌্যাম্পাস থেকে বের হন। ছাত্রটি ৮.৪২ মিনিটে ক‌্যাম্পাসে ফিরে আসেন। ক‌্যাম্পাসে ঘুরে আবার ৮.৪৮ মিনিটে ছাত্রটি বের হন। ৯.২৯ মিনিটে ছাত্রী ও ছাত্র দু’জনে ক‌্যাম্পাসে ফিরে আসেন। ৯.৩১ মিনিটে হস্টেলে চলে যান ছাত্রীটি। গভীর রাতে ধর্ষণের অভিযোগ হয়। পুলিশ জানার চেষ্টা করছে সহপাঠী দ্বিতীয়বার ক‌্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে প্রায় ৪০ মিনিট পর ছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ফেরেন। এই ৪০ মিনিটে কি ঘটেছিল? নির্যাতিতা, সহপাঠী ও গ্রামের পাঁচ যুবকের বয়ান মিলিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তবে এখনও তাঁদের বয়ানে বিস্তর অমিল।

    এদিকে ডাক্তারি ছাত্রীকে গত শুক্রবার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি কলেজের হস্টেলে নয়, তদন্তের স্বার্থে পুলিশের নজরদারিতে দুর্গাপুরে একটি ভাড়াবাড়িতে রয়েছেন। ছাত্রীর সঙ্গে রয়েছেন মা। বাড়িতে পুলিশ পাহারাও বসানো হয়েছে। আতঙ্কের নাম এখন মোহনবাগান সরণি। আইকিউ সিটির ঘটনার পর প্রায় সকলেই এড়িয়ে যাচ্ছেন ওই রাস্তা। অভিযোগ, রাস্তায় পথবাতি থাকলেও সন্ধ্যার পর তা জ্বলে না। আইকিউ সিটি হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে কর্মীরা এখন ওই রাস্তার বদলে ইস্পাত নগরীর রাস্তা ধরে হাসপাতাল যাচ্ছেন।

    দুর্গাপুরের বেসরকারি কলেজগুলির বাইরে সিসিটিভি লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে নগর নিগম। দুর্গাপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যাল, ম্যানেজমেন্ট, ল কলেজ মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু ক্যাম্পাসে সিসিটিভি থাকলেও কোনও কলেজের বাইরে নেই। সংশ্লিষ্ট কলেজের সহযোগিতায় সিসি ক‌্যামেরা লাগানো হবে বলে জানা গিয়েছে। নগর নিগমের প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সব সরকারি, বেসরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আমরা, পুলিশ, এডিডিএ, মহকুমা শাসক আলোচনায় বসব। কলেজ ও তার বাইরের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হবে। কালীপুজোর পর অফিস খুললেই এই আলোচনা হবে।’’
  • Link to this news (প্রতিদিন)