দীপাবলি ও কালীপুজোর উজ্জ্বল আলোয় মেতে ওঠার আগেই আবহাওয়া বদলের ইঙ্গিত। অক্টোবরের শেষে শীতের উত্তুরে ঠান্ডা হাওয়া প্রবাহিত হওয়ার আশায় থাকলেও, আপাতত সেই ঠান্ডার দেখা নেই। বরং দক্ষিণবঙ্গে আবারও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। আজ কালীপুজোর দিনেই রাজ্যের তিন জেলায় জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা।
দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়াও বইতে পারে। তবে হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, নদিয়া, পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামে বৃষ্টির আশঙ্কা নেই। আবহাওয়া দপ্তরের মতে, আগামী শনিবার ও রবিবার বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা আরও বাড়বে।
কলকাতায় আজ আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ২৬ ডিগ্রি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেশি থাকায় অস্বস্তিকর গরম লক্ষ্য করা যাবে। সর্বোচ্চ আপেক্ষিক আর্দ্রতা থাকবে ৯২ শতাংশ, সর্বনিম্ন ৫৮ শতাংশ।
উত্তরবঙ্গে আজ আকাশ পরিষ্কারই থাকবে, তবে দার্জিলিং, কালিম্পং ও জলপাইগুড়িতে দু-এক পশলা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে।
এদিকে, দক্ষিণ-পূর্ব আরব সাগর ও লাক্ষাদ্বীপ সংলগ্ন এলাকায় একটি সুস্পষ্ট নিম্নচাপ অবস্থান করছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। একইভাবে দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরেও নিম্নচাপ সৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের ভুবনেশ্বর কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দপ্তরের অধিকর্ত্রী মনোরমা মোহান্তি জানিয়েছেন, ‘এই নিম্নচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে গিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপের রূপ নিতে পারে। এর প্রভাবে ওড়িশার উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত ও বজ্রবিদ্যুৎসহ দমকা হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘২৪ অক্টোবর থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বাড়বে। রাজধানী ভুবনেশ্বরসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতেও বজ্রঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে।’
আবহাওয়া দপ্তর কৃষক ও সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষত খোলা মাঠে কাজ করা কৃষকদের বজ্রপাত ও ঝড়ো হাওয়ার সময় নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।
সব মিলিয়ে, কালীপুজোর আলোর উৎসবে হঠাৎ বৃষ্টিতে ছেদ পড়তে পারে। তাই আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে উৎসবের আনন্দে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ছায়া না পড়ে।