• নাম পরিচয় ভারিয়ে হবু স্ত্রীর ১৮ ভরি সোনা, ৪৪ লক্ষ টাকা নিয়ে ‘পলাতক’ যুবক
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২১ অক্টোবর ২০২৫
  • নাম-পরিচয় বদলে ‘হবু স্ত্রী’ এবং তাঁর পরিবারের টাকা লুট! লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ ওই যুবকের বিরুদ্ধে। হুগলির বাসিন্দা ওই যুবক অন্য একটি মামলাতে গ্রেপ্তার। তদন্তে নেমে পুলিশ এই খবর জানতে পারে। যুবকের নাম অনুপম রায় ওরফে শেখ মহম্মদ জামির আব্বাস।

    পুলিশ সূত্রে খবর, ম্যারেজ ওয়েবসাইট থেকে আলাপ হয়েছিল ওই যুবক-যুবতীর। মেয়েটির বাড়ি বর্ধমান। ছেলেটি নিজের বাড়ি কলকাতা বলে জানান। বিয়ের কথাও প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল। তার পরেই প্রতারণা শুরু হয়। বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ‘হবু স্ত্রী’-র ১৮ ভরি সোনার গয়না এবং পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগ ওই যুবকের বিরুদ্ধে।

    বর্ধমান সাইবার থানা অভিযুক্তের হদিশ পায়। পরে তারা জানতে পারে হুগলির গ্রামীণ জেলা পুলিশের সাইবার থানায় একটি মামলায় ইতিমধ্যে ওই অভিযুক্ত পুলিশের হেফাজতে। তাঁকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে হাজির করানোর জন্য রবিবার সাইবার থানার তদন্তকারীরা আবেদন জানিয়েছিলেন। ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটি’র কারণে আবেদন খারিজ করে দেন সিজেএম। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর আবেদন শোনা হবে বলে নির্দেশ দেন বিচারক।

    পুলিশ সূত্রে খবর, একটি ম্যারেজ ওয়েবসাইটে বর্ধমান শহরের বছর বত্রিশের এক যুবতী অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় অনুপম রায় নামে এক ব্যক্তির। ওয়েবসাইটে যুবক নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন ‘এ রায়’ নামে।  বাড়ি কলকাতার ভবানীপুর এলাকায় বলে জানিয়েছিলেন। ব্যবসা করেন। দু’জন ফোন নম্বর দেওয়া-নেওয়া করেন। নিয়মিত ফোনে কথা হত। যুবতীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন অভিযুক্ত যুবক। ওই যুবতী তখন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যুবকের আলাপ করিয়ে দেন।

    বিয়ের কথাবার্তা এগোতেই অনুপম জানান, তিনি আয়কর বিষয়ক কোনও গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়েছেন। কারণ, মোটা অঙ্কের টাকার প্রয়োজন। আয়কর সংক্রান্ত সমস্যার কারণে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে জানান। যুবতীর কাছে টাকা চান। যুবতী টাকা নেই জানালে সোনার গয়না আছে কিনা জানতে চায় অভিযুক্ত। যুবতী গয়না আছে বলেন এবং ১৮ ভরি সোনার গয়না অভিযুক্তকে দেন।

    কিছু দিন পরে বোনঝির ‘হার্টের সমস্যা’ -অজুহাত আরও টাকা চান অনুপম।  সাহায্যে এগিয়ে আসে যুবতীর পরিবার। গাড়িচালকের মাধ্যমে ২০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। বোনঝি মারা গিয়েছে জানিয়ে নার্সিংহোমের বিল মেটানোর জন্য আরও ১৮ লক্ষ টাকা নেন বলে দাবি যুবতীর পরিবারের। এর পর নানা অজুহাতে আরও ৬ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নেন। সেই টাকা একটি অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। এরপর মোবাইলে আর তাঁকে পাওয়া যায় না। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে যুবতীর পরিবার সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।

    গত শনিবার বর্ধমানের সাইবার থানা অনুপমের খোঁজ পায়। হুগলির গ্রামীণ এলাকার একটি প্রতারণার মামলায় যুবক গ্রেপ্তার হয়েছে। ফোন নম্বর থেকে যুবকের পরিচয় জানা যায়। অভিযুক্তের আসল নাম শেখ মহম্মদ জামির আব্বাস। কলকাতা নয়, হুগলির খানাকুলের চক্রপুরের বাসিন্দা। হুগলির সাইবার থানার পুলিশের হেফাজত থেকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে বর্ধমান সাইবার থানা।

     
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)