দেব গোস্বামী, বোলপুর: “আজ রাজনীতি নয়। মায়ের কাছে সকলের ভালো চাই।” বোলপুর কার্যালয়ে কালীপ্রতিমাকে দর্শনের পর এই কথাই বললেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। প্রতি বছর কালীপুজোয় তিনি উপোস থাকেন। পুজো শেষ হলে সেই উপোস ভঙ্গ হয়। এবারও সেই নিয়ম অক্ষুন্ন আছে। এদিন দুপুরে নীল পাঞ্জাবি পরে বোলপুরের কার্যালয়ে হাজির হন জেলার কোর কমিটির কনভেনার অনুব্রত মণ্ডল। এবার ৬০০ ভরি গয়নায় সাজানো হয়েছে মাকে। এবার পুরনো জাঁকজমকও ফিরে এসেছে।
বোলপুরে তৃণমূলের কার্যালয়ে প্রতি বছর কালীপুজো হয়। এবারও মহা সমারোহে ওই পুজোর আয়োজন হয়েছে। এবার এই পুজো ৪৬ বছরে পড়ল। অতীতে পুরনো কার্যালয় থাকার সময় একতলাতেই এই পুজোর আয়োজন হত। পরে নতুন কার্যালয় তৈরি হয়। তারপর থেকেই কার্যালয়ের দোতলায় এই পুজোর আয়োজন হয়ে আসছে। প্রতিবছর সোনার গয়নায় সাজানো হয় কালীমূর্তিকে। এবারও তার অন্যথা হয়নি। সূত্রের খবর, এবার ৬০০ ভরি গয়না থাকছে। ২০২১ সালে গয়নার পরিমাণ ছিল ৫৭০ ভরি। ২০১৮ সালে ১৮০ ভরি, ২০১৯ সালে ২৬০ ভরি, ২০২০ সালে ৩৬০ ভরি গয়নায় সাজানো হয়েছিল প্রতিমা।
এদিন কার্যালয়ে গিয়ে পুজোর আয়োজন খুঁটিয়ে দেখেন কেষ্ট। ভোগ-প্রসাদ রান্নার তদারকিও করেন। এদিন অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “১২ বছর বয়স থেকে মায়ের ভক্ত। পুজো করি। মায়ের কাছে সবারই ভালো চাই। বীরভূম জেলার মানুষ যেন ভালো থাকে, সাধারণ মানুষ যেন ভালো থাকে, সব শ্রেণির মানুষ যেন ভালো থাকে, সব জাতির মানুষ যেন ভালো থাকে।” তিনি আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক মানুষ। তাহলে কি পুজোর দিনগুলিতেও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকেন? অনুব্রত বলেন, “দুর্গাপুজো-কালীপুজোর সময় রাজনীতির কোনও পাঠ মনেই রাখি না।”
গত বছর অঙ্গরাগ ও আভূষণ সজ্জায় সাজানো হয়েছিল প্রতিমা, তবে পরানো হয়েছিল নামমাত্র গয়না। এবার সেই আগের মতোই জাঁকজমক ফিরে এসেছে। তৃণমূলের জেলা নেতা-কর্মীরা গতকাল, রবিবার থেকেই উপস্থিত কার্যালয়ে। এদিন সন্ধের পর থেকে রাতে পুজোর সময় আরও আমন্ত্রিতরা আসবেন। প্রত্যেকের সঙ্গে অনুব্রত দেখা করবেন বলে খবর। পুজো শেষে মালসায় আড়াই হাজার মানুষকে ভোগ বিতরণ করা হবে বলে খবর। এছাড়াও ভোগ-প্রসাদ বসিয়ে খাওয়ানোর আয়োজনও রয়েছে।
গতকাল, রবিবার পুজো উপলক্ষ্যে কার্যালয়ে আলপনা দেওয়া হয়। এক দলীয় কর্মী বলেন, “বিগত বছরের মতোই এবছরও কালীপুজোয় আয়োজনে কোনও খামতি নেই। জেলার নানা প্রান্ত থেকে মানুষ কার্যালয়ে আসবেন। প্রসাদেরও বিশেষ বন্দোবস্ত করা হয়েছে।” আলপনা দিতে আসা মহিলা সদস্যা তপতী মহন্ত মণ্ডল ও মোমিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুজোর শেষ লগ্নের প্রস্তুতি চলছে। প্রতিমা সাজানো, আলোকসজ্জার গেট প্রায় তৈরি। মহিলা সদস্যাদের স্বতঃস্ফূর্ততায় চলছে আলপনা আঁকার কাজও।” দলীয় কার্যালয়ের প্রবেশপথে আলোকসজ্জার গেটও রয়েছে। এই পুজো উপলক্ষ্যে প্রশাসনিক নিরাপত্তাও রয়েছে।