বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: দুর্যোগের ধাক্কা সামলে পর্যটনে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে উত্তরের পাহাড়-সমতল। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ভিড় থাকবে সিকিমেও। এবার ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল পর্যটন মরশুম। কিন্তু ভারী বর্ষণের জেরে খুব একটা ভালো কাটেনি দার্জিলিং-কালিম্পং পাহাড়, ডুয়ার্স এবং সিকিমের। হড়পা বান ও ভূমিধসের আতঙ্কে প্রচুর বুকিং বাতিল হয়েছে। অনেকে এলেও ভ্রমণসূচি কাটছাট করে ফিরে গিয়েছেন। তার উপর প্রবল বর্ষণে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকা ভাসতে সঙ্কট বেড়েছে। কারণ, পুজোর মরশুমে এরাজ্যে স্কুল-কলেজে লম্বা ছুটি থাকায় কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকা থেকেই বেশি পর্যটক উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে বেড়াতে আসেন।
দুর্গাপুজো মিটতে অবশ্য পর্যটনের খরা কাটার ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে। পর্যটকদের অনেকেই উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি সিকিমের চুংথাং, ফোদং গুম্ফা ও সেভেন সিস্টার্স ফল্স, লাচুং, ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার’ ইউমথাং, লাচেন, গুরুদোংমার ঘুরে দেখার জন্য বুকিংয়ের খোঁজ করছেন। দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় খান্না বলেন, “শীতের বুকিংয়ের জন্য বিভিন্ন রাজ্যের পর্যটকরা ফোনে খোঁজ নিচ্ছেন। রুম বুকিং করছেন। আশা করছি ধীরে ধীরে পাহাড়ে ভিড় বাড়বে।” দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং পাহাড়ে সাড়ে তিনশো হোটেল রয়েছে। কালিম্পংয়ে দুশো। প্রতিটি হোটেলেই বুকিং চলছে। পাহাড়ে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে দু’হাজারের বেশি হোম-স্টে রয়েছে। সেখানেও পর্যটকরা বুকিংয়ের জন্য খোঁজ নিচ্ছেন।
রাজ্য ইকো ট্যুরিজম কমিটির চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, “পর্যটনের সঙ্কট কাটতে চলেছে। আপাতত বলতে পারি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পাহাড়ে ভিড় থাকবে। ডিসেম্বর থেকে আরও ভিড় বাড়বে। বুকিংয়ের জন্য যেভাবে খোঁজ চলছে তাতে মনে হচ্ছে এবার ভিন রাজ্যের পর্যটকদের ঢল নামবে।” এদিকে ভূমিধসের দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে হাঁফ ছেড়েছে সিকিমের ট্রাভেল এজেন্সিগুলো। সেখানে কাজ করছে ১ হাজার ৭২৫টি ট্রাভেল এজেন্সি। থাকার জন্য হোটেলগুলিতে প্রায় ৩৮ হাজার ২০৮টি শয্যা রয়েছে পর্যটকদের জন্য। পর্যটকদের নিয়ে যাতায়াতের জন্য প্রায় ৩০ হাজার লাক্সারি, সাধারণ ট্যাক্সি এবং ছোট গাড়ি রয়েছে। দুর্গাপুজোর মরশুমে তাদের হা-হুতাশ করে সময় কেটেছে। কোথাও বুকিংয়ে সাড়া মেলেনি। গ্যাংটকের পর্যটন কর্মী নবীন ছেত্রী জানান, পুজোর মরশুম খুব খারাপ কেটেছে। কয়েকদিন থেকে বুকিংয়ে ভালো সাড়া মিলছে। এখন ক্রমশ ভিড় বাড়বে।