ফিরল সেই জাঁকজমক, কেষ্টর কালীর গায়ে ৬০০ ভরি সোনার ছটা! সব আসল? অনুব্রত-জবাব, মা টিনের গয়না পরবেন নাকি!
আনন্দবাজার | ২০ অক্টোবর ২০২৫
কেষ্ট ফিরেছেন। জাঁকজমক ফিরেছে। বোলপুরে তৃণমূল কার্যালয়ে ‘সোনার মা কালী’ এ বার ঝলমল করছেন প্রায় ৬০০ ভরি সোনায়। সমস্ত অলঙ্কার কি আসল সোনার? পুজোর অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা, তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের জবাব, ‘‘মা কখনও টিনের অলঙ্কার পরেছে নাকি! আমার তো জানা নাই। মা নিজের গয়না নিজেই তৈরি করে নেন।’’
বোলপুরে তৃণমূল দলীয় কার্যালয়ের কালীপুজো মানেই তা কেষ্টর পুজো। পুজোকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। জৌলুসও চোখে পড়ার মতো। তবে গরু পাচার মামলায় তিহাড় জেলে বন্দি থাকার জন্য ২০২২ এবং ’২৩ সালে গ্রামের বাড়ির দুর্গাপুজো এবং দলীয় কার্যালয়ের কালীপুজোয় থাকতে পারেননি তৎকালীন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। ওই দু’বছর নামমাত্র গয়না দিয়ে দেবীকে সাজানো হয়েছিল। গত বছর পুজোয় উপস্থিত থাকলেও আত্মীয়বিয়োগের জন্য দূর থেকেই দেবীদর্শন করেন অনুব্রত। এ বার সেই পুরনো জাঁকজমক ফিরল। কেষ্টও ফিরেছেন পুরনো মেজাজে ।
তৃণমূলেরই একটি সূত্রে খবর, এ বার কালীকে সাজানো হয়েছে আনুমানিক ৬০০ ভরি সোনার গয়না দিয়ে। সোনার ভরি লাখ টাকার বেশি। গত বার সোনার পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৭০ ভরি। এ বার কালীয় গলায়, হাতে, কোমরে— সর্বত্র সোনার ঝলকানি। সঙ্গে রয়েছে হিরে, চুনি, পান্না এবং বিভিন্ন রত্নখচিত অলঙ্কারও। পুজো উপলক্ষে বিশেষ ভোগ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
দুপুরেই দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছে গিয়েছেন কেষ্ট। দেবীর দর্শন সেরে তিনি বলেন, “সারা বছরে আমি একমাত্র এই একটা দিন উপবাস করি। আমাদের পুজোয় ভোগের বিশেষ আয়োজন থাকে। প্রতি বছর ভক্তেরা মাকে ১০ থেকে ১২ ভরি সোনা দান করেন। মাকে সোনা পরানোর সময়ে আমি নিজে উপস্থিত থাকি। এটা আমি দেখতে ভালবাসি। মা সোনা পরে থাকলে আমি শান্তি পাই।”
১৯৮৮ সাল থেকে শুরু হওয়া এই পুজোর জাঁকজমক শুরু হয় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে। যত বছর গিয়েছে, বেড়েছে পুজোর আয়োজনও। মাঝে কেবল মাতৃবিয়োগ ও স্ত্রীর মৃত্যুর কারণে দেবীকে নিজের হাতে সাজাতে পারেননি অনুব্রত। ২০২০ সালে কালীকে ৩০০ ভরির বেশি সোনার গয়নায় সাজানো হয়েছিল। ২০২১ সালে সোনার মুকুট, বাউটি, বাজুবন্ধ, কানের দুল, গলার হার, হাতের আংটি, কোমর বিছে মিলিয়ে প্রায় ৫৭০ ভরি সোনার গয়নায় কালী প্রতিমাকে সাজিয়েছিলেন তিনি। তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। তবে কেষ্ট সে সবে পাত্তা দেননি।