• শিলিগুড়ি, কলকাতা ছেড়ে এবার ডিসেম্বরে কমলা উৎসব পাটনায়! পাহাড়-ডুয়ার্সে বাড়ছে বিহার-ঝাড়খণ্ডের পর্যটক
    বর্তমান | ২১ অক্টোবর ২০২৫
  • ব্রতীন দাস, জলপাইগুড়ি: পাহাড়-ডুয়ার্সে পর্যটক টানতে অভিমুখ বদল পর্যটন ব্যবসায়ীদের! শিলিগুড়ি ও কলকাতা ছেড়ে এবার শীতে পাটনায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে কমলা উৎসব। লক্ষ্য, বিহার ও ঝাড়খণ্ডের পর্যটকদের আরও বেশি করে উত্তরবঙ্গে বিশেষ করে পাহাড় ও ডুয়ার্সে নিয়ে আসা। উত্তরের পর্যটনের প্রসারে ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর ডিসেম্বরে কমলা উৎসব হয়ে আসছে। এর আগে ডুয়ার্সের সামসিং, শিলিগুড়ির পাশাপাশি কলকাতায় ছ’বার অনুষ্ঠিত হয়েছে অরেঞ্জ ফেস্টিভাল। তাহলে হঠাৎ করে এবার উৎসবের অভিমুখ বদল কেন? পর্যটন ব্যবসায়ীরা অবশ্য বলছেন, কলকাতার পর্যটকরা এমনিতেই ফুরসত পেলেই পাহাড়, ডুয়ার্সে বেড়াতে আসেন। তাঁদের কাছে উত্তরবঙ্গ নিয়ে নতুন করে আর মার্কেটিংয়ের প্রয়োজন নেই। আমাদের বরাবর লক্ষ্য থাকে, পর্যটনে নতুন মার্কেট ধরার। সেক্ষেত্রে বিহার ও ঝাড়খণ্ড এখন অন্যতম টার্গেট। 

    পাহাড় ও ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে বিহার ও ঝাড়খণ্ডের পর্যটকের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। সারা বছর হিসেব করলে মোট পর্যটন ব্যবসার প্রায় ২৫ শতাংশ দিচ্ছেন ওই দুই রজ্যের পর্যটকরা। ফলে বিহার ও ঝাড়খণ্ডের ব্যবসায়ীরা যাতে আরও বেশি করে উত্তরবঙ্গে বেড়াতে আসার ব্যাপারে আগ্রহ দেখান, সেই লক্ষ্যেই এবার পাটনায় কমলা উৎসব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

    অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম সূত্রে খবর, আগামী ১২-১৪ ডিসেম্বর পাটনায় অরেঞ্জ ফেস্টিভালের দিন ঠিক হয়েছে। দার্জিলিং, মিরিক, সিটং, লাটপাঞ্চার, বক্সার পাশাপাশি ওই উৎসবে থাকবে নেপাল ও ভুটানের কমলা। একইসঙ্গে ওই উৎসবে তুলে ধরা হবে পাহাড় ও ডুয়ার্স তথা উত্তরবঙ্গের ট্রাডিশনাল খাবারদাবার ও সংস্কৃতি। উৎসব থেকে খোঁজ মিলবে পাহাড়ের অফবিট ডেস্টিনেশন, অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস, ট্রেকিং কিংবা হোম স্টে’র।

    অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজমের আহ্বায়ক রাজ বসু বলেন, কমলা উৎসবের মধ্যে দিয়ে পর্যটনের প্রসারের পাশাপাশি পাহাড়-ডুয়ার্সের খাবারদাবার, সংস্কৃতি তুলে ধরা এবং গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশ ঘটানোই আমাদের মূল লক্ষ্য। ২০১০ সালে সামসিংয়ে প্রথম কমলা উৎসব হয়। এরপর বেশ কয়েক বছর আমরা শিলিগুড়িতে অরেঞ্জ ফেস্টিভাল করেছি। কলকাতায় কমলা উৎসব হয়েছে ছ’বার। এবার প্রথম আমরা পাটনায় কমলা উৎসব করছি।

    অরেঞ্জ ফেস্টিভালের জন্য পাটনাকে বেছে নেওয়ার কারণ কী? রাজ বসু বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে পাহাড়-ডুয়ার্সে বেড়াতে আসা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে তাঁরা যাতে আরও বেশি করে উত্তরবঙ্গে ঘুরতে আসেন, এই লক্ষ্যে এবার পাটনায় অরেঞ্জ ফেস্টিভাল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথমবার যেহেতু আমরা পাটনায় কমলা উৎসব করতে চলেছি, সেকারণে খুব বেশি স্টল থাকবে না। কলকাতায় আমরা পাহাড়-ডুয়ার্সের সাড়ে সাতশো মানুষকে নিয়ে উৎসব করেছি। পাটনায় সাড়ে তিনশোর মতো পাহাড়-ডুয়ার্সের মানুষ থাকবেন। তাঁরা প্রত্যেকেই নিজেদের উৎপাদন কিংবা তৈরি করা কোনও না কোনও সামগ্রী নিয়ে হাজির থাকবেন ওই উৎসবে।পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাটনায় কমলা উৎসবে নেপাল, ভুটান, দার্জিলিং, সিকিম ও ডুয়ার্স মিলিয়ে মোট দশটি সার্কিট থেকে কমলা নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে যেমন নেপালের কোশি অঞ্চলের কমলা থাকবে, তেমনই ভুটানের চুখা জেলার কমলাও পাওয়া যাবে। থাকবে স্থানীয় মানুষের হাতে তৈরি আচার, জ্যাম-জেলি থেকে ফুলঝাড়ু, ঘর সাজানোর জিনিস সবই।
  • Link to this news (বর্তমান)