• জয়নগরের ৪০১ বছরের ধন্বন্তরি  মায়ের পুজোয় বিপুল ভক্ত সমাগম
    বর্তমান | ২১ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বারুইপুর: ১২ ভুঁইয়ায় এক ভুঁইয়া ছিলেন রাজা প্রতাপাদিত্য। তাঁর সঙ্গে সম্রাট জাহাঙ্গিরের বিরোধ হয়েছিল। প্রতাপাদিত্যকে বন্দি করেছিলেন দিল্লির সম্রাট। বন্দি অবস্থাতেই রাজার মৃত্যু হয়। প্রতাপাদিত্যর বন্ধু ছিলেন শংকর চক্রবর্তী। রাজার মৃত্যুর পর শংকর বংশধরদের রক্ষা করতে দক্ষিণ যশোহরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। আজ যেখানে জয়নগর। সেই অঞ্চল ছিল দক্ষিণ যশোহরের মধ্যে। তখন গোটা এলাকাজুড়ে ছিল জঙ্গল। বাঘ সহ অন্যান্য হিংস্র পশুর বাস করত। জনশ্রুতি, সেখানে তান্ত্রিক ভৈরবানন্দ কঠোর তপস্যা করেছিলেন। বর্তমানে যেখানে মন্দির সেখানেই ধ্যানে বসেছিলেন। চক্রবর্তী বংশের রাজেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সাধক ভৈরবানন্দের সন্ধান পেয়ে ডায়মন্ডহারবারের নেতরা এলাকা থেকে চলে এসেছিলেন এই অঞ্চলে। দু’জনের সাক্ষাৎ হয়।।ভৈরবানন্দ তাঁকে বলেন,আমি স্বপ্নাদেশ পেয়েছি আদিগঙ্গায় মা আছেন। তারপর আদিগঙ্গা থেকে কষ্টি পাথরের মূর্তি তুলে নিয়ে এসে পর্ণকুটিরে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভৈরবানন্দ রাজেন্দ্রনাথকে পুজোর দায়িত্ব দিয়ে অন্যত্র চলে যান। তারপর থেকে বংশ পরম্পরায় চক্রবর্তী পরিবার জয়নগরের ধন্বন্তরি কালীমন্দিরে পুজো করছেন। এখন মন্দিরের আকার বৃদ্ধি পেয়েছে। কালীপুজোয় নতুন করে সেজে উঠেছে ধন্বন্তরি কালীমন্দির। দূর দূরান্তের মানুষ আসে প্রতিমা দর্শন করতে। ৪০১ বছরে পড়েছে এই পুজো।

    কালীকে আরাধ্যা দেবী বলে সাধনা করেছিলেন সাধক ভৈরবানন্দ। জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে এই মন্দির। ঠাকুরের আশীর্বাদে ওষুধে অনেক অসুখ নিরাময় হয় বলে মানুষের বিশ্বাস। দূর থেকে মানুষ আসে ওষুধ নিতে। এই পরিবারের সদস্য অর্ণব চক্রবর্তী বলেন, নিষ্ঠা ভরে মায়ের পূজো হয়। ঐতিহ্য-রীতি মেনে এখনও হয় ছাগ বলি। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পুজো চলে। মাংস ভোগ দেওয়ার নিয়ম। মাংস রান্না হয় নিরামিষ উপায়ে। পিঁয়াজ ও রসুন ছাড়া রান্না। এছাড়াও দেওয়া হয় মাছের পদ। পাশাপাশি খিচুড়ি, পোলাও ও পায়েস দেওয়ার রীতি আছে। পুজোর সময় মাকে নতুন শাড়ি ও সোনার গয়নায় সাজিয়ে তোলা হয়। ঠাকুর খুব জাগ্রত। পুজো দেখতে ভিড় জমে। এছাড়াও মায়ের আবির্ভাব তিথি বৈশাখ মাসেও পক্ষকালব্যাপী 

    মেলা হয়।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)