• বিরল শুভ মুহূর্ত, নৈহাটির বড়মাকে ভারচুয়ালি অর্পণ দিঘার জগন্নাথ দেবের প্রসাদ
    প্রতিদিন | ২১ অক্টোবর ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাকপুর: আদি পরাশক্তির স্বরূপ বিমলা দেবী জগন্নাথদেবের মন্দির চত্বরের রক্ষক। তাই জগন্নাথের প্রধান পুজো অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে ভক্তরা বিমলার পুজো করেন। কালীর একটি তান্ত্রিক রূপ হিসেবে পূজিত হন বিমলা দেবী। এই রূপে তাঁর ভৈরব হলেন স্বয়ং জগন্নাথ দেব। তাই জগন্নাথদেবের প্রসাদ বিমলা দেবীকে অর্পণ করার পরেই মহাপ্রসাদ হয়। এই রীতি মেনেই সোমবার কালীপুজোর সন্ধ্যায় দিঘার জগন্নাথদেবের প্রসাদ ভার্চুয়ালি অর্পণ করা হল নৈহাটির বড়মাকে।

    ১০২ তম বর্ষে এমনই বিরল শুভ মুহূর্ত সাক্ষী রেখেই রাত ১২টায় পরম্পরা মেনে নৈহাটিতে সবার আগে শুরু হল বড়মার পুজো। তখন তিল ধরার জায়গা নেই নৈহাটি স্টেশন রোড-সহ অরবিন্দ রোডে। আর রাত আড়াইটে অঞ্জলি দেওয়ার সময় গোটা অরবিন্দ রোড দখল নেন ভক্তরা। যদিও ভিড় শুরু হয়েছিল রবিবার দুপুরে, বড়মাকে গয়না পরানোর সময় থেকেই। এই অনুমান করে আগে থেকেই প্রায় এক হাজার পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন ছিল। তবে, অনুমানের বাইরে ছিল দণ্ডী কাটার সংখ্যা ও অনলাইনে পুজোর আবেদন। পুজোর আগের দিন রাত ন’টার পর থেকেই দণ্ডী কাটতে ভক্তদের ঢল নামে। আর রাত বারোটার পর কাতারে কাতারে ভক্ত গঙ্গার ঘাটে ভিড় করেন স্নান করে দণ্ডী কাটার জন্য।

    বড় কালী পুজো সমিতির তরফে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত দণ্ডী সংখ্যাটা দাঁড়ায় কম-বেশি আড়াই লক্ষ। মনস্কামনা পূরণ হওয়ায় তারপরেও প্রায় ১০ ঘণ্টা চলেছে দণ্ডী কাটা। সংখ্যাটা হিসেবের বাইরে। সঙ্গে পুজো দিয়েছেন লক্ষ লক্ষ ভক্ত। রাজ্যে তথা দেশের বাইরে থাকা ভক্তদের পুজোর সুবিধার্থে অনলাইনে পুজোর ব্যবস্থা করেছিল বড় কালী পুজো সমিতি। পুজো কমিটির তরফে জানা গিয়েছে, সেখানে পুজোর অনুরোধও প্রায় এক লক্ষ।

    কলকাতা ইসকনের সহ সভাপতি তথা দিঘা জগন্নাথ মন্দিরের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাধারমণ দাস বলেন, “জগন্নাথ দেবের প্রসাদ প্রথমে বিমলাদেবীকে অর্পণ করা হয়। তখন সেটা মহাপ্রসাদ হয়। বিমলাদেবী মা কালির রূপ। তাই কালীপুজোর সন্ধ্যায় জগন্নাথ দেব যে প্রসাদ গ্রহণ করেছেন সেটা নৈহাটির বড়মাকে লাইভ ভিডিও কল মারফত অর্পণ করা হল। তারপরই প্রসাদ মহাপ্রসাদ হল। জগন্নাথ দেবের ভক্তরাও বড়মাকে দর্শন করেছেন। বড়মার ভক্তরাও জগন্নাথ দেবের দর্শন পেয়েছেন।”

    বড় কালী পুজো সমিতির সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য বলেন, “জগন্নাথ দেবের প্রসাদ বড়মাকে অর্পণ করা এই শুভ মুহূর্তের সাক্ষী থেকে আপ্লুত হয়েছেন ভক্তরা। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের কর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমরাও বড় কালী পুজো সমিতির তরফে জগন্নাথদেবের পুজো দিতে যাব বলেছি।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)