পর্যটকের ভিড় বাড়ছে উত্তরের পাহাড়ে ও সমতলে, দুর্যোগের রেশ স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২১ অক্টোবর ২০২৫
চলতি মাসের প্রথমদিকে আচমকা দুর্যোগে কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছিল উত্তরবঙ্গ। মুখ্যমন্ত্রী বার বার উত্তরবঙ্গ পরিদর্শন করেন। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ত্রাণ বিলি করেন। শুধু তাই নয়, দ্রুত উদ্ধারকার্য চালানোর নির্দেশ দেন। দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে স্বাভাবিক জনজীবন ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্যোগের ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছে উত্তরের পাহাড় ও সমতল। পর্যটনশিল্প ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ভিড় থাকবে সিকিমেও। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল পর্যটন মরশুম।
দার্জিলিং-কালিম্পং পাহাড়, ডুয়ার্স এবং সিকিমের পর্যটন শিল্প ভারী বৃষ্টির জেরে ধাক্কা খায়। হড়পা বান ও ভূমিধসেরর আতঙ্কে প্রচুর বুকিং বাতিল হয়। অনেকে এলেও ভ্রমণসূচি কাছছাট করে ফিরে গিয়েছেন। পুজোর মরশুমে এরাজ্যে স্কুল-কলেজে লম্বা ছুটি থাকে। কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকা থেকেই বেশি পর্যটক উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে বেড়াতে আসেন।
দুর্গাপুজো মিটতে একটু আশার আলো দেখা গিয়েছে। পর্যটনের খরা কাটার ইঙ্গিত মিলছে। পর্যটকদের অনেকেই উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি সিকিমের চুংথাং, ফোদং গুম্ফা ও সেভেন সিস্টার্স ফল্স, লাচুং, ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার’ ইউমথাং, লাচেন, গুরুদোংমার ঘুরে দেখা জন্য বুকিংয়ের খোঁজ করছেন বলে খবর।
দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় খান্না জানিয়েছেন, ‘শীতের বুকিংয়ের জন্য বিভিন্ন রাজ্যের পর্যটকরা ফোনে খোঁজ নিচ্ছেন। রুম বুকিং করছেন। আশা করছি ধীরে ধীরে পাহাড়ে ভিড় বাড়বে।‘ দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে খবর, দার্জিলিং পাহাড়ে হোটেলের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিনশো মতো রয়েছে। কালিম্পংয়ে দু’শো। প্রতিটি হোটেলেই বুকিং চলছে। পাহাড়ে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে দু’হাজারের বেশি হোম-স্টে রয়েছে। পর্যটকরা সেখানেও বুকিংয়ের জন্য খোঁজ নিচ্ছেন।
রাজ্য ইকো ট্যুরিজম কমিটির চেয়ারম্যান রাজ বসু জানিয়েছেন, ‘পর্যটনের সঙ্কট কাটতে চলেছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পাহাড়ে ভিড় থাকবে বলে আশা করছি। ডিসেম্বর থেকে আরও ভিড় বাড়বে। বুকিংয়ের জন্য অনেক পর্যটক খোঁজ নিচ্ছেন। তা থেকে মনে হচ্ছে এবার ভিন রাজ্যের পর্যটকরা বেশি পরিমাণে আসবে।‘
ভূমিধসের দুর্যোগ কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে সিকিমের ট্রাভেল এজেন্সিগুলো। সেখানে কাজ করছে ১ হাজার ৭২৫টি ট্রাভেল এজেন্সি। পর্যটকদের থাকার জন্য হোটেলগুলিতে প্রায় ৩৮ হাজার ২০৮টি শয্যা রয়েছে। পর্যটকদের নিয়ে যাতায়াতের জন্য প্রায় ৩০ হাজার লাক্সারি, সাধারণ ট্যাক্সি এবং ছোট গাড়ি রয়েছে।
দুর্গাপুজোর সময়ে তাঁদের একপ্রকার হা-হুতাশ করে দিন কেটেছে। সেভাবে কোনও বুকিং হয়নি। গ্যাংটকের পর্যটন কর্মী নবীন ছেত্রী জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর সময় খুব খারাপ কেটেছে। কয়েকদিন ধরে আবার বুকিং চালু হয়েছে। এখন আশা করছি ক্রমশ ভিড় বাড়বে। দুর্যোগের কবল কাটিয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে পাহাড়।