ভাইয়ের জন্য পছন্দের মিষ্টি কিনছিলেন বোন। ভাইফোঁটা ছাপ সন্দেশ বাদেও নিলেন ডাব সন্দেশ, সরের রোল, ক্ষীরকদম, বেকড কালাকাঁদ, বনবন সন্দেশ। এত রকম সন্দেশ নিতে গিয়ে বাজেট বেড়ে গেলেও আইসক্রিম সন্দেশটা কিনেই ফেললেন তিনি। পিয়ালি রায় নামে ওই মহিলা বললেন, ‘‘বছরের এই এক দিনই ভাইফোঁটা। ভাইয়ের প্রিয় মিষ্টি তো সাজিয়ে দিতেই হবে। তাই বাজেট বেড়ে গেলেও আইসক্রিম সন্দেশও নিয়ে নিলাম।’’
ভবানীপুর এলাকায় ওই মিষ্টির দোকানে সোমবার বিকেলে বেশ ভিড়। দোকানের কর্ণধার সুদীপ মল্লিক বলছিলেন, ‘‘ভাইফোঁটা উপলক্ষে বেশ কিছু নতুন মিষ্টি এসেছে। অনেকেই নিজেদের পছন্দ মতো মিষ্টি কিনে প্লেট সাজাচ্ছেন। আবার আমাদের নিজেদের ভাইফোঁটার প্লেট আছে পাঁচশো থেকে সাতশো টাকার মধ্যে। সাত থেকে দশ রকমের মিষ্টি থাকছে। বাজেট নিয়ে খুব একটা ভাবছেন না বোনেরা।’’
হেদুয়া এলাকার একটি মিষ্টির দোকানেও ভিড় জমিয়েছিলেন বোনেরা। দোকানের মালিক উৎপল মণ্ডল বললেন, ‘‘ভাইফোঁটা উপলক্ষে এসেছে মাদার ইন্ডিয়া সন্দেশ। এই সন্দেশ টু-ইন-ওয়ান। শুকনো ফল দেওয়া নতুন সন্দেশও এসেছে। আবার বড় আকারের থ্রি-ইন-ওয়ান শঙ্খ সন্দেশের দাম ২০০ টাকা।’’ ডায়াবেটিক ভাইদের জন্য বিশেষ ধরনের মিষ্টি এনেছেন অশোকনগরের কমল সাহা। তিনি বললেন, ‘‘বিশেষ ধরনের ডায়াবেটিক সন্দেশ ছাড়াও রয়েছে কম মিষ্টির ভেজিটেবল রসগোল্লা। দামও বোনেদের সাধ্যের মধ্যেই। এ ছাড়া, বিশেষ ধরনের ক্ষীরের পুলি, অমৃত কলস, ভাইফোঁটা ছাপ সন্দেশ, জলভরা সন্দেশ তো আছেই।’’
মিষ্টির বাজেট কিছুটা বাড়ালেও অবশ্য চিন্তা থাকছে আনাজ আর মাংসের দাম নিয়ে। দক্ষিণের গড়িয়াহাট বাজার থেকে লেক মার্কেট, যদুবাবুর বাজার থেকে উত্তরের মানিকতলা বাজার—সর্বত্র একই অবস্থা। ছোট এক-একটি ফুলকপি ৫০ টাকায় বিকোচ্ছে। বাঁধাকপি ৫০ টাকা কেজি। বেগুনের দাম তো প্রায় ধরাছোঁয়ার বাইরে, ১২০ টাকা কেজি। নাগালের মধ্যে আছে পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়স, টোম্যাটোর মতো কিছু আনাজ।
উত্তর থেকে দক্ষিণ, সর্বত্রই খাসির মাংসের দাম ৯০০ টাকা কেজি। যদুবাবুর বাজারের এক মাংস বিক্রেতা মহম্মদ সিরাজের অবশ্য দাবি, ‘‘ভাইফোঁটা উপলক্ষে দাম বাড়েনি। দশমীর পরথেকেই কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দাম বেড়েছে।’’ ভাইদের ইলিশ মাছ খাওয়াতে হলে মায়ানমারের ইলিশ খাওয়াতে হবে বলে জানালেন ‘ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি অতুল দাস। তিনি বলেন, ‘‘মায়ানমারের ইলিশও কিন্তু সুস্বাদু। ওজন অনুযায়ী দাম কেজি প্রতি ১৫০০ থেকে ২৪০০ টাকার মধ্যে।এখন কিন্তু বাংলাদেশের ইলিশ বাজারে নেই।’’