বাজিতে বাড়ির পোষ্যদের সমস্যা! হাফপ্যান্ট ও গেঞ্জি পরে শিশু-মহিলাদের মারধরের অভিযোগ পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে
প্রতিদিন | ২১ অক্টোবর ২০২৫
বিক্রম রায়, কোচবিহার: বাজি পোড়ানোয় অসুবিধা হয়েছে বাংলোয় থাকা পোষ্য কুকুরদের। তাইে রাগে রাস্তায় বেরিয়ে মহিলা ও শিশুদের মারধর করার অভিযোগ উঠল খোদ পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, হাফপ্যান্ট ও গেঞ্জি পরে রাস্তায় বেরিয়ে বাজি পোড়াতে থাকা শিশু ও মহিলাদের বেধড়ক মারধর করেন খোদ কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিশু আহত হন বলে অভিযোগ। রাতেই স্থানীয় একটি হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা করানো হয়। যিনি খোদ আইনের রক্ষক, তাঁর এমন কাজে ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয় মানুষজন। তারা এই বিষয়ে পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে চায়।
কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপারের দাবি, ”মারধরের কোনও ঘটনাই ঘটেনি।” বরং তাঁর পালটা দাবি, গভীর রাত পর্যন্ত বাজি ফাটানো চলছিল। বহুবার তাঁর নিরাপত্তায় থাকা পুলিশের সদস্যরাও বারণ করেছিল। কিন্তু কিছুই শোনা হয়নি বলেই দাবি দ্যুতিমান ভট্টাচার্যের।
সোমবার কালীপুজোর রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহার শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রেল গুমটি এলাকায়। অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা। জেলা পুলিশ প্রশাসনের একাধিক কর্তার বাড়ি রয়েছে সেখানে। রয়েছে কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্যের কোয়ার্টার। পুলিশ সুপারের বাড়ির সামনেই বেশ কয়েকজন শিশু এবং মহিলা বাজি ফাটাচ্ছিল। আর তাতে পুলিশ সুপারের বাংলোতে থাকা পোষ্য কুকুরদের সমস্যা হচ্ছিল বলে দাবি। এরপরেই একেবারে সাধারণ পোশাকে লাঠি হাতে বাংলো থেকে বেরিয়ে ওই শিশু এবং মহিলাদের পুলিশ সুপার মারধর করে বলে অভিযোগ। লাঠির আঘাতে বেশ কয়েকজন শিশু এবং মহিলা আহত হন বলে দাবি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শুধু পুলিশ সুপার নন, তাঁর সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী ছিলেন। তাঁরা সবাই সাধারণ পোশাকে ছিলেন বলেই দাবি। শুধু তাই নয়, বিভিন্নভাবে তাঁরা হুমকি দিচ্ছিলেন বলেও অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, সাধারণ পোশাকে এসে কীভাবে লাঠি হাতে এমন ঘটনা ঘটাতে পারেন? ঘটনাস্থলে মল্লিকা কার্জি নামে এক মহিলার আত্মীয় ছিলেন। লাঠির আঘাতে তিনিও আহত হন। এই অভিযোগ নিয়ে ওই মহিলা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। অন্যদিকে কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ”রাত একটা পর্যন্ত বাজি ফাটানো চলছিল। বারবার বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু কেউ শোনেননি।” তবে মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি বলেই দাবি পুলিশকর্তার।
অন্যদিকে ঘটনার একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে জেলা পুলিশ সুপারকে হাফপ্যান্ট ও গেঞ্জি পরে দেখা যাচ্ছে না। শুধু তাই নয়, মাথায় রয়েছে ফেট্টি। সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।