• গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ যুবতী, চাঞ্চল্য চন্দননগরে 
    আজকাল | ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি,২১ অক্টোবর: চন্দননগর স্ট্যান্ড সংলগ্ন গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ যুবতী। বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকার পর হঠাৎ যুবতীর এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় খোঁজ। ডুবুরি নামিয়ে ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদের নিয়ে স্পিড বোর্ডে খোঁজ শুরু করে পুলিশ। নিখোঁজ যুবতী চন্দননগর বৌবাজার বটতলার বাসিন্দা মানালী ঘোষ (২৫)। তিনি গত তিন বছর ধরে চন্দননগর বাগবাজার এলাকার জিটি রোড সংলগ্ন একটি জুয়েলারী দোকানে সেলস গার্লের কাজ করতেন। তাঁর সঙ্গে চন্দননগর বৌবাজার শীতলাতলার বাসিন্দা সত্যজিৎ রায়ের রেজিস্ট্রি বিবাহ হয় বছর তিনেক আগে।

    আগামী ৩ ফেব্রুয়ারী আনুষ্ঠানিক বিয়ের দিন স্থির করা ছিল। তার আগেই গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ চন্দননগরের যুবতী। যুবতীর পরিবারের অভিযোগ, গত তিনদিন ধরে কর্মস্থলে কোনও সমস্যা চলছিল। তাই এই ঘটনা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, একদিন দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে মানালীকে কান্নাকাটি করতেও দেখা গেছিল। 

    অন্যান্য দিনের মতোই মঙ্গলবার সকালেও কাজে যোগ দেয় যুবতী। অভিযোগ, তখনই ওই মানালী চাকরি ছেরে দিচ্ছেন, এই মর্মে তাঁকে দিয়ে দোকান কর্তৃপক্ষের তরফে লিখিয়ে নেওয়া হয়। তারপরই মানালী দোকান থেকে বেরিয়ে তাঁর স্বামী সত্যজিৎকে ফোন করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন চন্দননগর স্ট্যান্ডে বেশ কিছুক্ষণ বসেছিলেন ওই যুবতী। তারপর সেখানে বসেই একটি সুইসাইড নোট লেখেন। সেটাকে মোবাইল চাপা দিয়ে রেখে সোজা গঙ্গায় ঝাঁপ দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় চন্দননগর থানার পুলিশ। শুরু হয় গঙ্গায় তল্লাশি। ঘটনা প্রসঙ্গে ডিসি চন্দননগর অলকানন্দা ভাওয়াল জানিয়েছেন, যুবতীর খোঁজে সঙ্গে সঙ্গেই গঙ্গায় ডুবুরি নামিয়ে খোঁজ চালানোর কাজ শুরু করা হয়েছে। একইসঙ্গে খোঁজ শুরু করেছে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা। যখন ঘটনা ঘটেছে তখন গঙ্গার জলে জোয়ারের টান ছিল। পুলিশের তরফে সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে পরিবারের তরফে এখনও কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। মানালী ঘোষ যেখানে কাজ করতেন সেই দোকান কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে লেখা সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোকানে গিয়ে অন্যান্য কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মানালীর ভাসুর শুভজিৎ রায় বলেছেন, দোকানে কোনও একটা সমস্যা চলছিল। তবে সেটা ঠিক কি, সেটা তিনি বলতে পারবেন না। এদিন সকালে দোকানে ঝামেলা হয়। তারপর মানালী সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। তাঁর ভাইকে ফোন করেছিল। জানিয়েছিল, ওই দোকানের কাজটা তাঁর আর নেই। ভাই একটি কারখানায় কাজ করে। চন্দননগর স্ট্যান্ডে মানালিকে বসতে বলে তাঁর ভাই। কিন্তু যতক্ষণে তাঁর ভাই সেখানে পৌঁছায় গিয়ে দেখে যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। মানালীর বাবা মানস ঘোষের অভিযোগ, যে দোকানে কাজ করতেন তাঁর মেয়ে, সেখানে তাঁকে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাই সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। দোকানের মালিক দম্পতি সঞ্জয় দাস ও মমতা দাস। মমতাকে পুলিশকে আটক করেছে। যদিও মমতা দেবী জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরে মানালী মাসনিক অবসাদগ্রস্ত ছিল। যদিও দোকান মালিকের এই কথা ভিত্তিহীন জানিয়েছেন মানালীর পরিবার ও প্রতিবেশিরা।

    ছবি:‌ পার্থ রাহা

     
  • Link to this news (আজকাল)