• বারাকপুরের ভয়ানক আগুনে পুড়ে ছাই ২ কারখানা, কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা
    প্রতিদিন | ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাকপুর: মঙ্গলবার ভোররাতে বারাকপুর মোহনপুরের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ভয়ানক আগুন লাগে। লেলিহান শিখায় ভস্মিভূত কেমিক্যাল ফ্যাক্টরি ও লাগোয়া গেঞ্জি কারখানা। কয়েক কোটি টাকার সামগ্রীর ক্ষতি হয়েছে প্রাথমিক অনুমান। আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের ২০টি ইঞ্জিন। দুপুরের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও সন্ধ্যার পরেও আগুন ছিল। ফায়ার পকেট নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দমকল। ভয়ানক এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই।

    বারাকপুর শিউলি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঈশ্বরীপুর গ্রামে রয়েছে বলাগড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কটি। সেটি মোহনপুর থানার সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত। এই শিল্পতালুকের কিছু অংশ আবার রহড়া থানা এলাকার মধ্যে পড়ে। মঙ্গলবার ভোর আনুমানিক সাড়ে চারটে নাগাদ সেই শিল্পতালুকের কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে প্রথম আগুন লাগে। কারখানায় বিপুল পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগে লাগোয়া গেঞ্জি কারখানাতেও।

    দীপাবলির ছুটির কারণে কারখানা দু’টিতে ছুটি ছিল। খুব কম লোক ছিল। ঘটনাস্থলে ছিলেন কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী গাড়ির চালক ও কিছু কর্মী। আগুন লাগতেই দ্রুত তাঁরা বেরিয়ে পড়েন। গেঞ্জি কারখানার কর্মী সুশান্ত মণ্ডল বলেন, “আমরা কাজ শেষ করে বেশি রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। ভোরে পাশের কারখানার ধোয়া আমাদের কারখানায় ঢুকতেই ফায়ার অ্যালার্ম বাজলে ঘুম ভেঙে যায়। তখন বাইরে বেরিয়ে বুঝতে পারি পাশের কেমিক্যাল কারখানায় আগুন লেগেছে। ওই কারখানার আগুন আমাদের কারখানাকেও সম্পূর্ণ ভস্মিভূত করে দিয়েছে।”

    দমকলের ডিজি অভিজিৎ পাণ্ডে বলেন, “দুপুরের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন সম্পূর্ণভাবে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। এখানে প্রতিটি কারখানার মধ্যে গ্যাপ নেই বললেই চলে। আগুন লাগার কারণ-সহ সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

    তবে, শর্ট শার্কিট থেকেই অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনা ঘটেছে বলেই প্রাথমিক অনুমান করছে দমকলের কর্তারা। ঘটনার পর থেকে যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী। বারাকপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর রাজবংশি জানান, “ওই শিল্পতালুক থেকে বেশ কিছুটা দূরে লোকালয় রয়েছে। অনেকেই ভয়াবহ আগুন দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। বাসিন্দাদের স্বার্থে কারখানা কর্তৃপক্ষদের নিয়ে বৈঠক করা হবে।”

    ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে পুলিশ কমিশনার মুরলিধর শর্মা জানিয়েছেন, “কেমিক্যাল ফ্যাক্টরির পাশে একাধিক কারখানা ছিল। গেঞ্জি কারখানায় আগুন ছড়ালেও ব্যাটারি কারখানা, গ্যাস গোডাউন-সহ আশপাশের কারখানায় আগুন ছড়ানোর আগেই তা নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখছে দমকল বিভাগ।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)