ডাক্তার হতে মেধা লাগে না! কাস্ট আর বাবার টাকাই সব! বামঘেষা চিকিৎসকের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে শোরগোল
প্রতিদিন | ২২ অক্টোবর ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: ‘‘ডাক্তারি পড়তে মেধা লাগে না, আপনার কাস্ট এবং বাবার টাকা ভাগ্য নির্ধারণ করবে।’’ অন্য কোনও পেশার কেউ নন। সমাজমাধ্যমে এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বামঘেঁষা বলে পরিচিত চিকিৎসক ডাক্তার নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজিকর কাণ্ডে নির্যাতিতার সুবিচার চেয়ে আন্দোলনকারীদের মিছিল, মিটিংয়ে যাঁকে দেখা যেত। কিন্তু নিজের পেশার জুনিয়রদের নিয়ে তাঁর এমন পোস্ট ঘিরে হইচই শুরু হয়েছে। তুঙ্গে বিতর্ক। উঠছে অন্য প্রসঙ্গও।
আরজিকর আন্দোলনের শুরুতে জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের মিটিং-মিছিলে দেখা যেত নারায়ণবাবুকে। পরে সেভাবে তাঁকে দেখা যায়নি। এই প্রেক্ষাপটে তাঁর নয়া পোস্ট তৈরি করেছে রহস্য। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের কিঞ্জল নন্দ, আসফাকুল্লা নাইয়াদের ‘টার্গেট’ করলেন তিনি। নারায়ণবাবু নয়া পোস্টে বলেছেন, ‘‘ডাক্তারি পড়তে এখন বাবার টাকা লাগে। র্যাঙ্ক পিছনে থাকলেও টাকা দিয়ে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়া যায়। আর সিডিউল কাস্ট, সিডিউল ট্রাইব হলেই বিশেষ সুবিধা মেলে। মেধার দরকার হয় না।’’
ঘটনাচক্রে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়েছেন কিঞ্জল নন্দ। আরেক আন্দোলনকারী ডাক্তার আসফাকুল্লা নাইয়া আবার জেনারেল কাস্ট নন। অনেকেই বলছেন, ‘‘সমাজ মাধ্যমে এই পোস্টের আড়ালে চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলতে চেয়েছেন কিঞ্জল নন্দ, আসফাকুল্লা নাইয়ারা সুযোগ সুবিধা নিয়ে ডাক্তার হয়েছেন।’’ যদিও নারায়ণবাবুর বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন চিকিৎসকরাই। ডা. সঞ্চারী রায় প্রতিবাদ করে বলেছেন, ‘‘পুরোটা সহমত হতে পারলাম না। জিনিয়াসদের এই হিসেবের বাইরে রাখছি।’’
অন্যদিকে জাতীয় বাংলা পরিষদের সভাপতি চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘ডাক্তার হতে নাকি মেধা লাগে না! এ কী রকম উক্তি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘নিজেকে বিচারকের আসনে বসিয়ে স্রেফ প্রচার পাওয়ার জন্য এই ধরনের ফেসবুক পোস্ট করেছেন নায়ারণ বন্দ্যোপাধ্যায়। চিকিৎসক হতে যথেষ্ট মেধা লাগে। যে ছেলেটি এই মুহূর্তে ডাক্তার হতে চাইছে, সে জানে ভবিষ্যতের রাস্তা কতটা কঠোর-কঠিন। জয়েন্ট এন্ট্রান্সে সুযোগ পেলেই কেউ ডাক্তার হয়ে যায় না। ধারাবাহিকভাবে তাঁকে পড়াশোনা করতে হয়। কঠোর অধ্যবসায় লাগে চিকিৎসক হতে।’’ ডা. অরিন্দম বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘আজকে যে ছেলেটি ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে সব জেনেই সে আগামীর পথে পা বাড়াচ্ছে। নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলব সস্তা প্রচার পাওয়ার জন্য এসব কথা লিখবেন না।’’