তৃণমূল, বিজিপিএমের পর এবার ‘বিদ্রোহী’ বিজেপির বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তিনিও। তাঁর বক্তব্য, গোর্খাল্যান্ডের দাবি পূরণে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার। ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করে পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান (পিপিএস) নিয়ে নতুন নাটক করছে। একইসঙ্গে বিজেপির স্থানীয় নেতা ও এমপি’র ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এনিয়ে চরম অস্বস্তিতে পদ্ম শিবির। বিদ্রোহী বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে তাদের দাবি, পাহাড়বাসীর স্বার্থেই মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করা হয়েছে। স্বভাবতই পাহাড়ে পদ্ম শিবিরে ‘গৃহযুদ্ধের’ পারদ ঊর্ধ্বমুখী।
যদিও দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, ফালতু লোকের বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়ে সময় নষ্ট করতে চাই না। আর পিপিএস নিয়ে যা করার কেন্দ্রীয় সরকার করছে। তা নিয়ে ওঁর ভাবতে হবে না।
উত্তরবঙ্গে পদ্ম শিবিরের ‘বিদ্রোহী’ মুখগুলির মধ্যে কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা অন্যতম। পাহাড় ইস্যুতে তিনি তিনবার বিধানসভায় একাই ধরনায় বসেছিলেন। এবার তিনি মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধেই গলা ফাটাচ্ছেন। মঙ্গলবার চম্পাসারিতে বাড়িতে বসে বিষ্ণুপ্রসাদ বলেন, পাহাড়বাসী পৃথক রাজ্য চান। এই দাবিরই রাজনৈতিক মোড়ক ‘পিপিএস’। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মধ্য দিয়েই কেন্দ্র সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছিল। একবার বৈঠকে ডাকও পেয়ে অংশও নিয়েছিলাম। এরপর আর ডাক পাইনি। পাহাড়বাসীর দাবি পূরণের কোনও ইচ্ছাই নেই কেন্দ্রের। তাই ছাব্বিশের ভোটের আগে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করে নাটক শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক খেলা ছাড়া এটা কিছুই নয়। পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্স সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানে কেন্দ্র অবসরপ্রাপ্ত আমলা পঙ্কজকুমার সিংকে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করেছে বলে প্রচার করেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। তাঁর দাবি, রক্তপাত, অস্থিরতা ও প্রাণহানি ছাড়াও মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ পাহাড়ের ইতিহাসে প্রথম।
এনিয়ে প্রশ্ন তুলে কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক বলেন, আগে তিনবার পাহাড়ে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ হয়েছিল। কোনও লাভ হয়নি। একবার ডিজিএইচসি, আর একবার জিটিএ গঠিত হয়েছে। ওইটুকুই! চতুর্থবার মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন—গোর্খাদের স্বপ্ন তাঁর স্বপ্ন, সমস্যা শীঘ্রই মিটবে। তাহলে আবার মধ্যস্থতাকারী কেন? সাতবছর আগে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন স্থানীয় এমপি। তিনি সমস্যা মেটাতে ব্যর্থ। তাই কি মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ?
বিজেপির দার্জিলিং সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি সঞ্জীব লামা অবশ্য বলেন, দলের সঙ্গে ওই বিধায়কের সম্পর্ক নেই। মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ নিয়ে ওঁর বক্তব্যও ভিত্তিহীন, মাথা ঘামাচ্ছি না। প্রসঙ্গত, মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ নিয়ে আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ও অনীত থাপার দল বিজিপিএম। তাদের বক্তব্য, ভোটের আগে এটা বিজেপির গিমিক। গেরুয়া দলের দার্জিলিং পার্বত্য সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি বলেন, সমাজের মঙ্গলের জন্যই মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করেছে কেন্দ্র।