প্রাক্তন পুরপ্রধান স্বপনের উপর হামলা, পাল্টা মারধরের অভিযোগ কাউন্সিলারের
বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও সংবাদদাতা, নাগরাকাটা: মালবাজারের তৃণমূল কাউন্সিলার অজয় লোহারের অশালীন ভিডিও ভাইরাল হওয়াকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাস্তার মাঝে মারপিটের ঘটনা ঘটল। ওই কাউন্সিলার ও তাঁর পরিবারের সদস্য, অনুগামীরা মাল পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান স্বপন সাহার উপর অতর্কিত হামলা চালান বলে অভিযোগ। তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত স্বপনকে ‘জুতোপেটা’ করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
যদিও পাল্টা হামলার অভিযোগ তুলে অজয়ের দাবি, ২০২৩ সালের আগস্টে মাল পুরসভার সরকারি কাজে তৎকালীন চেয়ারম্যান স্বপন সাহার সঙ্গে তিনি কলকাতায় গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে প্রযুক্তির সাহায্যে হোটেলের রুমে ওই ভিডিও তৈরি করান স্বপন সাহা। পুরসভা সংক্রান্ত ‘অনিয়মে’ তার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই ভিডিওটি ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো তাঁকে। এনিয়ে গত সোমবার মাল থানায় স্বপন সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কেন চক্রান্ত করে এ ধরনের ভিডিও বানিয়ে তা ভাইরাল করা হয়েছে, তা নিয়ে স্বপন সাহার কাছে এদিন জানতে চান তাঁর পরিবারের সদস্যরা। অজয়ের দাবি, ভিডিও নিয়ে প্রশ্ন করতেই স্বপন ও তার অনুগামীরা আমার মা ও স্ত্রীর গায়ে হাত তোলে। এরপরই আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছই এবং ঝামেলা বাঁধে।
যদিও ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি স্বপনের। তিনি বলেন, ভিডিওর ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। তাছাড়া ২০২৩ সালের ভিডিও এখন ছড়াতে যাব কেন? যতদূর জানতে পারছি, ওই ভিডিও অনেকের কাছেই আছে। মাল পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অজয় লোহার ও তাঁর পরিবারের কারও গায়ে হাত তোলার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন স্বপন। তাঁর দাবি, কী ঘটেছে, সেটা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে স্পষ্ট। পুলিশ তদন্ত করুক।
এদিনের মারপিটের ঘটনার জেরে দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মাল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। মাল থানার আইসি সৌম্যজিৎ মল্লিক বলেন, দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ জানিয়েছেন, মালবাজারের নেতৃত্বকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ব্যক্তিগত রেষারেষির কারণে কে, কার সঙ্গে মারপিট করল, কে কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ করল, দল তার দায় নেবে না। এটা মাথায় রেখে চলতে হবে।
থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে মাল পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান স্বপন সাহার দাবি, এদিন দুপুর দু’টো নাগাদ তিনি মাল আদর্শ বিদ্যাভবনের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেসময় তাঁর উপর দল বেঁধে হামলা চালানো হয়। যারা হামলা চালায়, তাদের হাতে রড, লাঠি এমনকী আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁর সঙ্গে থাকা মাল পুরসভার এক কাউন্সিলার সহ কয়েকজন ছিলেন। তাঁরা বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়েছে। পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে স্বপনের দাবি, মারধরের সময় তাঁর গলায় থাকা সোনার চেন এবং টাকা ছিনতাই করা হয়েছে। কোনওক্রমে তিনি হামলাকারীদের হাত থেকে পালিয়ে রক্ষা পান।
অন্যদিকে, মাল পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলার অজয় লোহারের পাল্টা দাবি, স্বপন দলবল নিয়ে আমার মা ও স্ত্রীর গায়ে হাত তুলেছে। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। আমাকেও মারধর করা হয়েছে। আমার গলায় সোনার চেন ছিনতাই করা হয়েছে।