নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: রাজস্থান থেকে আসা শুকনো লঙ্কা বোঝাই ট্রাক আটকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করল দুষ্কৃতীরা। রায়গঞ্জ শহরের বন্দর এলাকার একটি ক্লাবের কালীপুজোর নাম করে তারা টাকা চায়। লরি চালক ও অন্যান্য কয়েকজনকে তারা হুমকিও দেয়। এর প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। রায়গঞ্জ থানার পুলিশ বন্দর এলাকা থেকে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পরিস্থিতি সামাল দেয়। একই ধরনের আরও একটি ঘটনা ঘটেছে শহরের তুলসীতলা এলাকায়। সেখানেও অভিযোগ, দাবিমতো কালীপুজোর চাঁদা না পেয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে এক ব্যবসায়ীকে।
রায়গঞ্জ থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, দু’টি ঘটনারই তদন্ত চলছে। বন্দরে লরি আটকে চাঁদা চাওয়ার ঘটনায় জয়দেব বিশ্বাস নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে যে গাড়িতে চেপে এসে চাঁদার জন্য জুলুম করছিল বলে অভিযোগ সেই গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
চাঁদার জুলুমবাজি নিয়ে উৎসব পার্বণের সময় রায়গঞ্জে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ওঠে। মাঝে এসব কিছুদিন থমকে থাকলেও, ফের এই প্রবণতা দেখা দেওয়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে শহরের ব্যবসায়ী মহলে। যার বহি:প্রকাশ মঙ্গলবার দেখা যায় বন্দর এলাকায়। বন্দরের আলু, পিয়াজ, শুকনো লঙ্কার ব্যবসায়ী কার্তিক সাহা বলেন, আগে কোনও সমস্যা না থাকলেও, এলাকায় চাঁদার নামে রীতিমতো তোলাবাজির ঘটনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এবার আমাকেও সেই সমস্যায় পড়তে হল। এদিন এক ট্রাক শুকনো লঙ্কা বন্দরে আমার গোডাউনে কাছে এসে দাঁড়ায়। সেই লঙ্কা আনলোড করার আগেই স্থানীয় ক্লাবের নাম করে কয়েকজন এসে ক্লাবের রশিদে ৫০ হাজার টাকা লিখে দিয়ে যায়। বলে চাঁদা না দিয়ে লরি খালি করা যাবে না। গাড়ি যাতে আনলোড না করা যায় তারজন্য একটি গাড়িকে লরির পিছনে দাঁড় করিয়ে রেখে যায়। বিষয়টি আমাদের ব্যবসায়ী মহলও জানতে পারে। এনিয়ে এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একপ্রস্থ বিক্ষোভও হয়। খবর পেয়ে আমাদের সংগঠন রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী ঘটনাস্থলে আসেন। চলে আসে পুলিশও। তারাই পরিস্থিতি সামাল দেয়। অতনুবাবু বলেন, ব্যবসায়ীরা সমাজের অন্যতম মেরুদণ্ড। এভাবে চাঁদার নামে তোলাবাজি অনভিপ্রেত।
অন্যদিকে, সোমবার রাতে তুলসীতলা পার্বতী স্কুলের কাছে সঞ্জয় পাল নামে এক ব্যবসায়ীর গাড়ি আটকে চাঁদার জুলুমবাজির অভিযোগ উঠেছে। সঞ্জয়বাবুর অভিযোগ, আমার মালবাহী গাড়ি ওই রাস্তা দিয়ে আসার সময় স্থানীয় এক ক্লাবের কালীপুজোর নাম করে চাঁদা চায় কয়েকজন। তারা হাজার চাইলে আমি ২০০ টাকা দিতে চাই। কিন্তু তারা ৫০০ টাকার কম নিতে রাজি ছিল না। সেই নিয়েই আমাকে ঘিরে নিয়ে কয়েকজন মিলে বেধড়ক মারধর করে। মাটিতে ফেলে পেটায়। এনিয়ে রায়গঞ্জ থানার দ্বারস্থ হয়েছি।
চাঁদার জুলুম নিয়ে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ। - নিজস্ব চিত্র।