গভীর রাতে বাজি ফাটানোয় মারধরের অভিযোগ, আঙুল পুলিশ সুপারের দিকে
বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: তখন প্রায় মাঝরাত। দেদার আতশবাজি ফাটানোয় ধোঁয়ায় ঢেকেছে এলাকা। এমন সময় বাজি ফাটাতে থাকা কয়েকজনকে মারধর করার অভিযোগ উঠল কোচবিহার শহরে। মারধরকারীদের চেহারা খুব একটা স্পষ্ট না হলেও কালীপুজোর রাতের ওই ঘটনার ভিডিও (সত্যতা যাচাই করেনি বর্তমান) অন্যতম অভিযোগকারী আইনজীবী মল্লিকা কার্জির বাড়ির সিসি ক্যামেরায় বন্দি হয়েছিল। সেই ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর আঙুল উঠেছে পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্যের দিকে। কারণ তাঁর বাড়ির পাশেই ঘটেছে ঘটনাটি। যদিও এসপি’র দাবি, রাত একটা পর্যন্ত দেদার বাজি ফাটানো হচ্ছিল। এতে ভয় পাচ্ছিল তাঁর পোষ্য সারমেয়রাও। কিছু বাজি তাঁর বাংলোর ভিতরে এসেও পড়ে। তবে, ওই রাতে কাউকে মারধরের অভিযোগ তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন।
এসপি এদিন পুড়ে যাওয়া বাজির অংশ দেখিয়ে বলেন, নিষেধ করার পরেও রাত একটা পর্যন্ত পটকা ফাটানো হয়েছে। আমার স্ত্রী গুনে দেখেছেন একসঙ্গে ৬০টা পর্যন্ত বাজি ফাটিয়েছে ওরা। আমার গার্ড বারবার বারণ করেছেন। তবে মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি।
যদিও আক্রান্তদের দাবি, দ্যুতিমানের বাংলোর পাশে আতশবাজি পোড়াচ্ছিলেন কয়েকজন। খোদ এসপি বাংলো থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসে ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন শিশু-কিশোর সহ এক পুরুষ ও মহিলাকে মারধর করেন। ঘটনাকে ঘিরে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রেলগুমটি চত্বরে উত্তেজনা ছিল। ঘটনায় জখম আইনজীবী মল্লিকা কার্জি, তাঁর স্বামী পার্থ রায় সহ এলাকার বেশকিছু মানুষ এসপি’র বাংলোর সামনের এদিন রাস্তা অবরোধ করেন। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে তাঁদের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তি হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণগোপাল মিনা সহ বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে ন’জন পুরুষ ও তিনজন মহিলাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
একাংশ বাসিন্দা আবার প্রশ্ন তুলছেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাত ১০টা পর্যন্ত সবুজ বাজি ফাটানোর কথা। ওই মহিলা আইনজীবী হয়েও কোন আক্কেলে গভীর রাতে বাজি ফাটাচ্ছিলেন? তিনি যদি বাজি না ফাটিয়ে থাকেন, আইনরক্ষার জন্য বাকিদের বারণ করেননি কেন? আইনজীবীর কথায়, দীপাবলি উপলক্ষ্যে শিশুরা বাজি ফাটাচ্ছিল। আমরা দেখছিলাম। হঠাৎই এসপি কয়েকজনকে নিয়ে এসে চড়াও হন। তিনি স্যান্ডো গেঞ্জি, হাফপ্যান্ট ও মাথায় ফেট্টি পরেছিলেন। তাঁর বা তাঁর কুকুরের অসুবিধা হলে বলতে পারতেন। আমরা আইনি পদক্ষেপ নেব।
এসপি’র স্ত্রী রোশনি দাস ভট্টাচার্যের কথায়, রাতে শুয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎই পরপর বাজি ফাটা শুরু হয়। গভীর রাতে এমনটা হলে বয়স্ক ও পোষ্যদের জন্য খুবই সমস্যার। সকলের সচেতন হওয়া উচিত। নিজস্ব চিত্র।