• দলের প্রাক্তন নেতা-কর্মীরাই এখন গেরুয়া শিবিরে আতঙ্ক
    বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: দলের প্রাক্তন নেতা এবং কর্মীরা নব্য বিজেপিদের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে। কয়েকজন নব্য যুবনেতাকে দেখলেই ধাওয়া করছেন প্রাক্তনরা। রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটানোর ঘটনাও ঘটছে। কখনও কখনও আবার তাঁরা জেলা পার্টি অফিসের কাছে এসেও নব্যদের চমকে যাচ্ছেন। আতঙ্কে পাঁচ থেকে সাতজন যুবনেতা পার্টি অফিসের বাইরে মাঝেমধ্যেই লাঠি হাতে পাহারা দিচ্ছেন। মার খাওয়ার পর যুবনেতারা থানায় গেলেও বিশেষ সুবিধা হচ্ছে না। আতঙ্কে সন্ধ্যার পর তাঁদের অনেকেই একা রাস্তায় বের হচ্ছে না বলে অনেকের দাবি।

    বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের এক যুবনেতা নিজেকে আগে শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতেন। পরে পর্দাফাঁস হয়ে যায়। দলের নেতা এবং কর্মীরা জানতে পারেন, ওই নেতা কোনও দিনই শিক্ষক ছিলেন না। বিতর্কিত এই নেতা এখন প্রাক্তনদের টার্গেটে রয়েছেন। কয়েকদিন আগে নীলপুর মোড়ের কাছে তাঁকে মারধর করা হয়। এক আদি বিজেপি নেতা বলেন, কয়েকজনের জন্য দলের ক্ষতি হচ্ছে। নেতৃত্ব সেটা বুঝতে পারছে না। যাঁদের জন্য দলের ক্ষতি হচ্ছে তাঁরাই এখন গণরোষের শিকার হচ্ছেন। প্রায়ই তাঁদের কেউ না কেউ ধাওয়া করছে। ওই নেতাদের গ্রহণযোগ্যতা নেই। সেই কারণে ধাওয়া করলেও কেউ প্রতিবাদ করছেন না। 

    প্রাক্তন বিজেপি নেতা শ্যামল রায় বলেন, মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করলে শাস্তি তো পেতেই হবে। ওঁদের বিরুদ্ধে জনরোষ তৈরি হয়েছে। সেই কারণে ওঁরা এখন একা রাস্তায় বের হতে পারছেন না। 

    দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিতর্কিত তিন-চারজন যুবনেতাকে বিজেপির অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে। তারপরও তাঁরা জেলায় সামনের সারিতে রয়েছেন। দলের এক নেতা বলেন, বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের ভাবনা-চিন্তা করা দরকার। না হলে বিধানসভা নির্বাচনেও দলকে খেসারত দিতে হবে। জেলায় দলের সমর্থক রয়েছে। কিন্তু কয়েকজনের জন্য সব অঙ্ক বদলে যাচ্ছে। 

    তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, এই জেলায় বিজেপি কোনও ফ্যাক্টর নয়। ওদের মানুষ অনেক আগেই প্রত্যাখান করেছে। যারা মার খাচ্ছে, তারা নিশ্চয় কোনও না কোনও অন্যায় করেছে। না হলে ওদের এভাবে রাস্তায় ফেলে পেটাবে কেন? যত দিন যাবে ওদের বিরুদ্ধে আমজনতার গণরোষ বাড়বে। তবে, এসবের সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়। কারণ, ওদের আমরা প্রতিপক্ষ বলে মনেই করি না। বিজেপির এক নেতা অবশ্য বলেন, মার দিতে এসে ওরাও মাঝেমধ্যে পাল্টা খাচ্ছে। বিজেপি নেতা রাজু পাত্র বলেন, তৃণমূল এসব করছে। তবে, তাতে বিজেপির কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। মানুষ ওদের জবাব দেবে।
  • Link to this news (বর্তমান)