দুই বর্ধমানে প্রাচীন মন্দিরগুলিতে পুজো দিতে উপচে পড়ল ভক্তরা
বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ভাতারের বড়বেলুন থেকে আসানোলের কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে মঙ্গলবার পুজো দিতে ভিড় উপচে পড়ে। বর্ধমানের বীরহাটার বড়মা, কমলাকান্ত কালীবাড়িতেও ছবিটা ছিল একই রকম। ভাতারের বড়বেলুন গ্রামে ভিড় সামাল দিতে প্রশাসনকে নাজেহাল হতে হয়। সে ৭০০ বছর আগের কথা। তখন ভাতারের বড়বেলুন গ্রামের নাম ছিল বিল্বপত্তন। সেখানে সাধক ভৃগুরাম মায়ের আরাধনা শুরু করেন। সেই থেকেই মায়ের পুজো হয়ে আসছে নিষ্ঠার সঙ্গে। বড়বেলুনের বড়মায়ের উচ্চতা প্রায় ২১ ফুট। পুজোর রাত থেকে এই গ্রামে ভক্তদের ভিড় বাড়তে থাকে। মঙ্গলবার সকাল থেকে সেই ভিড় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। স্থানীয়দের দাবি, এই মন্দির চত্বরে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয়েছিল। সোমবার রাতেও তিলধারণের জায়গা ছিল না। মায়ের পুজো দিতে বিভিন্ন জেলার বাসিন্দারা ভিড় করেছিলেন। খেরুর গ্রামে ক্ষেপীমায়ের কাছেও বহু ভক্ত প্রার্থনা জানিয়ে আসেন।
মেমারির আমাদপুর গ্রামের বড়, মেজ, সেজ এবং ছোট মায়ের কাছে পুজো দিতেও জেলার বাসিন্দারা ভিড় করেছিলেন। গ্রামে ঢুকতেই রয়েছেন ২০ ফুট উচ্চতার বড়মা। তারপরই রয়েছেন মেজ, সেজ এবং ছোট মা। গ্রামের বাসিন্দাদের পাশাপাশি বাইরে জেলা থেকে আসা ভক্তরাও মায়ের মন্দিরে পুজো দিয়েছেন। রায়নার ছোটবৈনান গ্রামেও প্রাচীন মন্দিরগুলিতে জনস্রোত নামে। একইভাবে কাটোয়া এবং কালনার মন্দিরগুলিতেও পুজো দেওয়ার জন্য ভক্তদের লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছিল। দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি কালীমন্দিরেও ভক্তদের ভিড় ছিল। বর্ধমানের কমলাকান্ত কালীবাড়িতে ভোগের আয়োজন করা হয়েছিল। পুজো দেওয়ার পাশাপাশি অনেকেই ভোগ খেয়ে বাড়ি যান। দুর্লভা কালীবাড়ি বা ছিন্নমস্তা কালীমন্দিরেও ভক্তিভরে ভক্তরা পুজো দিয়েছেন। স্থানীয়রা বলেন, পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন প্রান্তেই রয়েছে প্রাচীন মন্দির। নানা অলৌকিক কাহিনিও ছড়িয়ে রয়েছে। আউশগ্রামের তকিপুর গ্রামেও রয়েছে বহু প্রাচীন পুজো। এখানেও কালীপুজোর রাত থেকে জনজোয়ার নামে। আউশগ্রাম ছাড়াও ভাতার, মঙ্গলকোট সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা গ্রামে আসেন। পুলিশ জানিয়েছে, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটি প্রাচীন মন্দিরের সামনেই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। বর্ধমানের বীরহাটার বড়মা কালীমন্দিরে এদিন সকাল থেকে ভক্তরা পুজো দেন। সোমবার রাতে এখানে তিলধারণের জায়গা ছিল না। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। কাঞ্চননগরের কঙ্কালেশ্বরী মন্দিরে সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত ভোগ বিতরণ করা হয়। এদিনও ভক্তদের ভিড়ে এই মন্দির চত্বর জমজমাট ছিল। সন্ধ্যায় মন্দিরের সামনে পুকুরে বিশেষ আরতির আয়োজন করা হয়েছিল। মঙ্গলকোটের পালিশগ্রামও কালীপুজো ঘিরে জমজমাট হয়ে উঠেছে। এই গ্রামের বাসিন্দা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার। তিনি বলেন, পুজো উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মায়ের কাছে পুজো দিতে আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা ভিড় জমান। কুলটি বন্ধু মহল ক্লাবের মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র