ভাইফোঁটার আগে ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকাল ছানা, কালনায় এক কেজির দাম ৩৪০ টাকা
বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, কালনা: ভাইফোঁটা উপলক্ষ্যে ছানার চাহিদায় মঙ্গলবার কেজি প্রতি দাম ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ৩৪০ টাকায় গিয়ে থামে, যা এখনও পর্যন্ত রেকর্ড বলে দাবি মিষ্টি ব্যবসায়ীদের। ছানার দাম রেকর্ড গড়ায় দুধ ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটলেও মিষ্টি ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চিন্তায়। তাঁদের বক্তব্য, এত দামে ছানা কিনে কমদামে ভালো মিষ্টি বিক্রি করা সম্ভব নয়। তাই এবার ভালো মিষ্টি খেতে গেলে দাম বেশি দিতে হবে।
কালনা স্টেশন সংলগ্ন এসটিকেকে রোডের ধারে তেঁতুলতলা মোড়ে রয়েছে মহকুমার বৃহত্তম ছানার পাইকারি বিক্রয় কেন্দ্র। কালনা, কাটোয়া, দাঁইহাট, পূর্বস্থলী ও হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়া, নদীয়া জেলার শান্তিপুর থেকে প্রতিদিন বহু ব্যবসায়ী ছানা বিক্রি করতে আসেন এই পাইকারি বাজারে। গড়ে প্রতিদিন ১৫-২০ কুইন্টাল ছানা কেনাবেচা হয়। উৎসব ও বিয়ের মাসগুলিতে ছানার জোগান বেড়ে ২৫-৩০ কুইন্টাল হয়ে যায়। সাধারণত ছানা গড়ে কেজি প্রতি ১৬০-১৬৫ টাকায় বিক্রি হয়। উৎসব, পার্বণে তা অনেকটাই বেড়ে যায়। ভাইফোঁটায় মিষ্টির চাহিদা থাকে ব্যাপক। দিন কয়েক ধরে ছানার দাম ২০০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। মঙ্গলবার জোগানের তুলনায় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এক লাফে ছানার কেজি প্রতি দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪০ টাকা।
ছানা বিক্রেতা জিৎ ঘোষ, শুকরাম ঘোষ বলেন, এমনি সময়ে ছানা বিক্রি করে গোরুর খাবারের খরচ ওঠে। সেভাবে লাভের মুখ দেখা যায় না। যেভাবে গোরুর খাবারের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে দুধ বিক্রি করলে একটু লাভ দেখা যায়। ছানা বিক্রি হলে লাভ হয় না। কিন্তু অত দুধ বিক্রি করা যায় না বলে ছানা তৈরি করতে বাধ্য হই। উৎসবের দিনগুলি ও বিয়ের মাসে দাম একটু ঊর্ধ্বমুখী থাকায় কিছুটা লাভের মুখ দেখা যায়।
ছানার আড়তদার বাপি পাল বলেন, বহু পুরনো এই ছানার পাইকারি বাজারে বিভিন্ন জেলা থেকে গো-পালকরা ছানা নিয়ে আসেন। চাহিদা ও জোগানের উপর নির্ভর করে ছানার দাম। নিলামের মধ্যে দিয়ে ছানার দাম ঠিক হয়। পুজো, উৎসব, বিয়ের সময় ২৫-৩০ কুইন্টাল ছানা কেনাবেচা হয়। কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে মিষ্টির দোকানদাররা বাজারে এসে এবং ফোনে বুকিং করে ছানা কেনেন। বুকিংয়ের ছানা পৌঁছে দিতে হয়। এবার সোমবার কেজি প্রতি ছানার দাম ছিল ২৬৫ টাকা। মঙ্গলবার তা বেড়ে দাঁড়ায় কেজি প্রতি ৩৪০টাকা। কালনার এক মিষ্টির দোকানদার রণজিৎ মোদক বলেন, ছানার দাম অনেকটাই ঊর্ধ্বমুখী। ছানার দর বেশি থাকায় দুধের জোগান কমে গিয়েছে। ক্ষীরের তৈরি মিষ্টি বানাতে বেশি দামে দুধ কিনতে হচ্ছে। তবুও লাভের অঙ্ক কমিয়ে দোকানের সুনাম ধরে রাখতে ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে মিষ্টি তৈরি করা হচ্ছে। ক্ষীরকদম, ভাঁইফোটা সন্দেশ, পেটি ইলিশ, রাজভোগ রসগোল্লা সহ নানা রকমের মিষ্টি রয়েছে। - নিজস্ব চিত্র