• এসআইআরে নাম বাদ গেলে আইনি সহায়তা দেবে তৃণমূলের লিগ্যাল সেল
    বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় বীরভূম জেলার কারও নাম বাদ গেলে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেবে তৃণমূলের লিগ্যাল সেল। জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক অনুব্রত মণ্ডলের পরামর্শে ইতিমধ্যেই একটি লিগ্যাল সেল খোলা হয়েছে। বীরভূম জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী তথা দলের সহ সভাপতি মলয় মুখ্যাপাধ্যায় বলেন, অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশে জেলায় একটি লিগ্যাল সেল তৈরি করা হয়েছে। রামপুরহাট, বোলপুর থেকে দুবরাজপুর, বিভিন্ন ব্লক থেকে দু’-একজন করে রয়েছেন সেই টিমে। তিনি আরও বলেন, বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া চলাকালীন কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে আমরা তাঁকে সবরকমভাবে সাহায্য করব। তাঁর হয়ে যেখানে যেতে হয় আমরা যাব। বিজেপি যতই চক্রান্ত করুক না কেন একজন বৈধ ভোটারের নামও ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে দেব না। 

    কালীপুজোর ছুটির পরই এরাজ্যে এসআইআরের কাজ শুরু হবে বলে কমিশন সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে। ইতিমধ্যেই কমিশনের কর্তারা এনিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে একপ্রস্থ বৈঠক সেরেছেন। সেখানে কমিশনের তরফে স্পষ্ট করা হয়েছে, একজন যোগ্য ব্যক্তিও তালিকার বাইরে যাতে না থাকেন তা নিশ্চিত করা হবে। তবুও এনিয়ে নিশ্চিতে ঘুমাতে পারছেন না বাসিন্দাদের অনেকেই। তার উপর বিজেপির নেতারা যেভাবে এক কোটি বাসিন্দার নাম বাদ যাবে বলে দিনরাত হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তাতে আশঙ্কার কালো মেঘ দেখতে শুরু করেছেন অনেকে। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছেন, রাজ্যের আধিকারিকদের ভয়-হুমকি দেখিয়ে নিজেদের মনমতো বিজেপির কথায় কাজ করাতে চাইছে কমিশন। ফলে এসআইআর আদৌ কতটা ‘নিরপেক্ষ’ হবে, সেই নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে তৃণমূলও। 

    কিছুদিন আগেই লাভপুরের বিজয়া সম্মিলনির মঞ্চ থেকে অনুব্রত হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘কারও ক্ষমতা নেই ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেয়। আমরা উড়ে এসে জুড়ে বসিনি। আমরা বাংলাদেশ থেকে আসিনি। ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা নেই ক্ষমতা নেই বিজেপি সরকারের।’ রামপুরহাটের একটি বিজয়া সম্মিলিনিতে যোগ দিয়ে তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন-‘এলাকার কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে সেই এলাকার বিজেপির নেতা-কর্মীদের বাড়ি ঘেরাও করবেন।’ সব মিলিয়ে মাঠে নেমে এখনও পর্যন্ত এসআইআরের কাজ কমিশন শুরু না করলেও এনিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। তবে, তৃণমূলের তরফে আইনি সহায়তা দেওয়ার ঘোষণাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। কারণ, জেলার পিছিয়ে পড়া বহু মানুষ রয়েছেন যাঁরা এসআইআরের মারপ্যাঁচ বোঝেন না। নাম বাদ পড়লে বিপাকে পড়ার আশঙ্কা প্রবল। ফলে তাঁদের আইনি পরিষেবা দিয়ে সাহায্য করলে আগামী নির্বাচনে তার সুবিধা পাবে শাসকদল। যদিও জেলা বিজেপির সভাপতি দীপক দাস বলেন, জেলার সিংহভাগ তৃণমূল নেতাই এসআইআরের অর্থ বোঝেন না। ওঁরা কী বললেন, কী করলেন, তা নিয়ে আমরা গুরুত্ব নিতে নারাজ। এসআইআর নিয়ে যা করার কমিশন করবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)