বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রায় ৮০ হাজার বাড়ি তৈরি, রাজ্যে প্রথম পশ্চিম মেদিনীপুর
বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৫
রাজদীপ গোস্বামী মেদিনীপুর
মাথার উপর পোক্ত ছাদ তৈরি করাই প্রধান লক্ষ্য ছিল। সেই লক্ষ্যে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রায় ৮০ হাজার বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। এর ফলে রাজ্যের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে জঙ্গলমহলের এই জেলা। ইতিমধ্যেই বকেয়া বাড়ি তৈরির কাজ দ্রুতগতিতে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মানুষ রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাড়ি পেয়েছে। প্রথম পর্যায়ে জেলায় এক লক্ষ দু’হাজার ১১০জন বাসিন্দা এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। বাড়ি তৈরির প্রথম ধাপের জন্য প্রায় ৬০৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপেও প্রায় ৬০০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। তবে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে কিছু পরিবার পিছিয়ে পড়েছে। সেই বাড়িগুলি তৈরির কাজ কেন শেষ হয়নি, তা জানতে লাগাতার প্রয়াস চালানো হচ্ছে।
জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক পরিবার উপকৃত হয়েছে। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে পশ্চিম মেদিনীপুর অন্যান্য জেলার থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। নিয়মিত পর্যবেক্ষণের ফলেই সাফল্য এসেছে। আশা করা যায়, দ্রুত বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হবে। সকলের সহযোগিতা ছাড়া এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না।
প্রসঙ্গত, আচমকা কেন্দ্রের তরফে বাড়ি তৈরির টাকা আটকে দেওয়া হয়। বাড়ি না পেয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। মূলত বর্ষার মরশুমে তাঁরা বেশি সমস্যায় পড়ছিলেন। বন্যা পরিস্থিতিতেও তাঁদের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করতে হতো। সেই কথা মাথায় রেখেই রাজ্য সরকারের লক্ষ্য ছিল সকলের জন্য স্থায়ী বাসস্থান তৈরি করা। তাই রাজ্য সরকার কেন্দ্রের উপর ভরসা না করে, নিজের উদ্যোগেই দ্রুত গৃহহীনদের সমস্যার সমাধান করতে ময়দানে নামে।
প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, রাজ্যজুড়ে ১২ লক্ষ মানুষ বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার প্রশাসনিক অনুষ্ঠান থেকে এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। এমনকী, সম্পূর্ণ কাজটি স্বচ্ছতার সঙ্গে করার দিকেও বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। গত ২০২১-’২২ সালে তৈরি হওয়া উপভোক্তাদের তালিকার উপর ভিত্তি করে জেলায় ৩ লক্ষের বেশি বাড়িতে সার্ভে করার কাজ শুরু করে প্রশাসন। এরপর ১ লক্ষ ২ হাজারের বেশি বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, বাড়ি তৈরির জন্য দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেয়ে শুধু কেশপুর ব্লকে ৭২৯৩টি, কেশিয়াড়ি ব্লকে ৬৭৬৫টি, সবং ব্লকে ৮৯৫২টি, ডেবরা ব্লকে ৫৭৬৮টি ও শালবনী ব্লকে ৬৯১৩টি পরিবার উপকৃত হয়েছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, অনেকে টাকা পেয়ে অন্য কাজে ব্যবহার করে ফেলেছেন। অনেকে আবার টাকা পেয়েও কাজ শুরু করেননি। প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শালবনীর বাসিন্দা সুশীল দাস বলেন, এবছর অতিবৃষ্টির ফলে বহু মানুষের ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। আশা করছি, পরের ধাপে সেই সমস্ত পরিবার এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে।