• দুর্গাপুর ব্যারাজের জলস্তর বৃদ্ধিতে ইনটেক প্ল্যান্টে জমছে কচুরিপানা
    বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: দুর্গাপুর ব্যারাজের জলস্তর বৃদ্ধি পেলেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের (পিএইচই) বড়জোড়া প্রকল্পের ইনটেক প্ল্যান্টে জমছে কচুরি পানা। বারবার কচুরি পানা জমে যাওয়ায় জল উত্তোলনে বিঘ্ন ঘটছে। তার ফলে বাঁকুড়া শহর এবং সংলগ্ন এলাকায় আর্সেনিক মুক্ত পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ থমকে যাচ্ছে। ওই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে ১৫ লক্ষ টাকার প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পিএইচই কর্তৃপক্ষ। ব্যারাজে ইনটেক প্ল্যান্টের এলাকা মোটা তারের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জলাধারের তলদেশের মাটিতে কংক্রিটের গাঁথনির উপর লোহার তারের খাঁচা তৈরি হবে। ওই জাল ভেদ করে জল উত্তোলনের জন্য ব্যারাজে ফেলা পাইপের মুখের কাছে কচুরি পানা বা আবর্জনা যেতে পারবে না। তার ফলে পাম্পের সাহায্যে জল তোলার পর্ব নির্বিঘ্নে ঘটবে বলে পিএইচই-র আধিকারিকরা জানিয়েছেন। 

    জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের বাঁকুড়া ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ঋতম ভট্টাচার্য বলেন, বারবার কচুরি পানা জমে যাওয়ায় পাইপের মুখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তার ফলে নিরবচ্ছিন্নভাবে পাম্প চালানো যাচ্ছে না। জলের জোগানে বিঘ্ন ঘটায় পুরো প্রকল্পে তা প্রভাব ফেলছে। আমরা নিয়মিত জল সরবরাহ করতে পারছি না। কচুরি পানা সরানোর জন্য ব্যারাজে বারবার ডুবুরি নামাতে হচ্ছে। সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে পাইপের মুখের চারপাশ লোহার খাঁচা দিয়ে ঘিরে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারজন্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। 

    জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া জেলায় জল সরবরাহ করার জন্য প্রতিদিন দুর্গাপুর ব্যারাজ তথা বড়জোড়া প্রকল্প এলাকায় গড়ে ১৬ ঘণ্টা পাম্প চালাতে হয়। সেখান থেকে দৈনিক সাড়ে ছ’কোটি লিটার জল সরবরাহ করা হয়। তারমধ্যে শুধুমাত্র বাঁকুড়া শহরের জন্য প্রায় দেড় কোটি লিটার জল পাঠানো হয়। ওই প্রকল্পের পরিস্রুত পানীয় জলের ভরসায় শহর এবং লাগোয়া বাঁকুড়া-১ ও ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ থাকেন। ফলে পিএইচই কর্তৃপক্ষ কোনও কারণে জল সরবরাহ বন্ধ রাখলে বাঁকুড়াবাসীকে যথেষ্ট ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিষয়টি জানার পরেও দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রকল্পের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বাড়তি খেয়াল রাখেনি বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। গতবছর পুজোর সময় নিম্নচাপের জেরে ভারী বর্ষণের কারণে দামোদর নদ ফুলেফেঁপে উঠেছিল। ওইসময় দুর্গাপুর ব্যারাজ জলে টইটম্বুর হয়ে ওঠে। কচুরি পানা জমে যাওয়ায় ইনটেক প্ল্যান্ট টানা বন্ধ রাখতে হয়েছিল। তখন নদীয়া থেকে ডুবুরি এনে প্রকল্প চালু করতে হয়। এবারও কয়েকবার ওই পরিস্থতি তৈরি হয়েছিল। আগামী দিনে যাতে ওই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ফের না ঘটে, তারজন্য পিএইচই কর্তৃপক্ষ পাকাপাকিভাবে এলাকা ঘিরে ফেলতে চাইছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)