• নিষ্প্রভ চকোলেট, নয়া ত্রাস নকল বুলেট বোমা
    বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: চকোলেট বোমা। একটি ফাটলেই বুক কেঁপে ওঠে অধিকাংশের। কিন্তু নকল বুলেট বোমা তো এর কাঠি উপরে। ফাটলে শুধু বুক কাঁপে না, সর্বাঙ্গ কেঁপে ওঠে। হাওড়া, হুগলি সহ একাধিক জেলার বাজার ছেয়ে গিয়েছে এই নকল বোমায়। প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হয়েছে। দেদার ফেটেছে। বিষয়টি ঘুরিয়ে স্বীকার করে নিয়েছে পুলিশ। এক পদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানান, শুধু বুলেট বোমা নয়। যে কোনও অবৈধ বাজি জ্বালালেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সবুজ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত জানান, এমনিতেই বুলেট বাজির শব্দ বেশ বেশি। আর এখন তার নকল বাজারে চলে আসায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সত্যিই মুশকিল।

    এবছর কালীপুজো ও দীপাবলিতে রমরমিয়ে ফেটেছে নকল বুলেট বোমা। সেগুলি দেখতে নিরীহ। অনেকটা চুটপুট বাজির মতো। নামী কিছু প্রস্তুতকারক তৈরি করে। নিরি এবং পেসো অনুমোদিত এই বাজির চাহিদা আছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই বাজারে চলে এসেছে নকল বুলেট বোমা। আর চিন্তা বাড়িয়েছে পুলিশ ও সাধারণ মানুষের। নকলগুলি দেখতে হুবহু আসল বুলেট বোমার মতো। মাত্র আধ ইঞ্চি ব্যাস। লম্বায় খুব জোর এক ইঞ্চি হবে। কিন্তু সেটি ফাটলে কানে তালা। নকল বলে শব্দসীমার নির্দিষ্ট কোনও মাপকাঠি নেই। ফাটলে প্রাণ কার্যত ওষ্ঠাগত।

    হাওড়া, হুগলি সহ একাধিক জেলার বাজার ছেয়ে গিয়েছে এই বোমায়। বহু দোকানে বিক্রি হয়েছে নকল বুলেট। কাউন্টারে প্রকাশ্যে রাখা আসল বুলেট বোমার প্যাকেট। কেনার আগে এর সম্পর্কে জানতে চাইলে, সরাসরি চকোলেট বোমার সঙ্গে তুলনা টানছেন বহু বিক্রেতা। হাওড়ার ঘুষুড়ি এলাকার এক দোকানদারের কথায়, ‘এটা নিয়ে যান। চকোলেট বোমা ফেল। একবার ফাটান তারপর ফের কিনতে আসবেন।’ এই শুনে কেউ কেউ বুলেট বোমা কিনতে চাইছেন। তখন টেবিলের নীচে মজুত করে রাখা নকল বুলেট বোমার প্যাকেট গছিয়ে দিচ্ছেন বিক্রেতা। আশ্চর্যের বিষয়, নকল বুলেট বোমার প্যাকেটেও ছাপা রয়েছে সবুজ বাজির কিউ আর কোড। তা দেখে নিশ্চিন্ত হয়েই কিনছেন ক্রেতারা। ভিড়ে ঠাসা বাজারে কিউ আর কোড স্ক্যান করার সুযোগ পাচ্ছেন না। ফলে অজান্তেই নকল বাজি কিনে বাড়ি ফিরছে সাধারণ মানুষ। তারপর ফাটানোর পর শব্দের তীব্রতায় পিলে চমকে যাচ্ছে নিজেদের। প্রাণ ওষ্ঠাগত প্রতিবেশিদের। এবছর কালীপুজোয় অন্যান্য নিষিদ্ধ বাজির সঙ্গে নকল বুলেটের দৌরান্ত্যেও বেজায় সমস্যায় পড়েছে শিশু, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে হৃদরোগীরা। এমনই একটি নকল বুলেট বাজির প্যাকেটে থাকা কিউ আর কোড স্ক্যান করার পর সামনে এল চাঞ্চল্যকর একটি বিষয়।

    নকল বুলেট বোমার কিউ আর কোড স্ক্যান করলে মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে ভেসে উঠছে শুধুমাত্র বাজি তৈরির জন্য খ্যাত তামিলনাড়ুর শিবকাশীর একটি রুট ম্যাপ। আর আসল বুলেট বোমার উপরে থাকা কিউ আর কোড স্ক্যান করলে বেরিয়ে আসছে প্রস্তুতকারক সংস্থার সঠিক নাম, ঠিকানা, পেসো এবং নিরির রেজিস্ট্রেশন নম্বর সহ এই বাজি তৈরির অনুমোদনের শংসাপত্র। তা যাচাই হচ্ছে না বলেই বাড়ছে নকল বুলেটের কারবার।
  • Link to this news (বর্তমান)