নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দেওয়ালির পার্টিতে এক তরুণীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে তাঁরই বান্ধবীর জামাইবাবুর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গরফা এলাকায় একটি বহুতলের ছাদে। তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে রীতেশ সিং নামে ওই অভিযুক্তকে সোমবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গরফা এলাকার বাসিন্দা ওই নির্যাতিতার বাড়িতে দেওয়ালি পুজো ছিল। এই উপলক্ষ্যে সেখানে তাঁর বন্ধু-বান্ধবীরা এসেছিলেন। পুজো শেষে খাওয়াদাওয়া হয়। অভিযোগ, নির্যাতিতার বান্ধবীর সঙ্গে তাঁর জামাইবাবু রীতেশ সিং ওই বাড়িতে এসেছিল। এরপর অযাচিতভাবে সে নির্যাতিতার বাড়ির ছাদে চলে যায়। সেখানে বাজি পোড়ানোর পাশাপাশি মহিলারা জড়ো হয়ে নিজেদের মধ্যে গল্প করছিলেন। গানও বাজছিল। ছাদের একপ্রান্তে চলছিল বাজি পোড়ানো। সেখানে পৌঁছে অভিযুক্ত ওই তরুণীর সঙ্গে বাজি পোড়ানো শুরু করে। প্রথমে অভিযোগকারিণী কিছু সন্দেহ করেননি। হঠাৎই তিনি খেয়াল করেন, বাজি পোড়ানোর অছিলায় তাঁর হাত ধরতে চাইছে বান্ধবীর জামাইবাবু। তিনি বুঝতে পারেন, জামাইবাবুর উদ্দেশ্য ভালো নয়। এরপর তাঁকে বিভিন্ন অশ্লীল ইঙ্গিতও করতে থাকে। বিরক্ত তরুণী দূরত্ব বজায় রাখছিলেন। আচমকাই তাঁর কাছে এসে শ্লীলতাহানি করে অভিযুক্ত রীতেশ। এরপরই সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেখানে উপস্থিত অন্যরা তাকে ধরে ফেলে। ওই তরুণী ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি জানান। সঙ্গে সঙ্গে গরফা থানার অফিসাররা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ঘটনাস্থলেই তাঁর অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে পুলিশ। তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে শ্লীলতাহানির মামলা রুজু করে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, অভিযুক্ত রীতেশের তরুণীর বাড়িতে যাতায়াত রয়েছে। তরুণীর বাবা গ্যারাজ চালান। রীতেশ ওই গ্যারাজে যেত। সেই সুবাদে অভিযোগকারিণীর বাবার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর বাড়িতে যাতায়াত শুরু। তদন্তকারীরা জেনেছেন, অভিযোগকারিণী তরুণীর সঙ্গে এলাকার এক যুবকের সঙ্গে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টি জানত অভিযুক্ত রীতেশ। এই সম্পর্ক নিয়ে তরুণীর বাবাকে জানিয়েছিল সে। পাশাপাশি এও জানায়, ওই যুবক ভালো নয়। তরুণীর প্রেমিকের একাধিক মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এমনকী তার স্ত্রীর সঙ্গেও সম্পর্ক রয়েছে। যা নিয়ে সে প্রতিবাদ করেছে একাধিকবার। তরুণী তাঁকে বিয়ে করলে ভালো থাকবে না। তরুণীকে মিশতে নিষেধ করে ওই যুবকের সঙ্গে। সম্পর্ক ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বলে। কিন্তু বিষয়টি পাত্তা দেননি অভিযোগকারিণী। তরুণী বাবাকে জানান, অভিযুক্ত মিথ্যে কথা বলছে। রীতেশের অন্য মতলব রয়েছে। তরুণী কথা না শোনায় তাঁর প্রতি ক্ষোভ জন্মায় রীতেশের।