নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: আরামবাগে রামকৃষ্ণ সেতু ও তার আশপাশ এলাকা পরিদর্শনে এলেন পূর্তদপ্তর ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা। পূর্তদপ্তর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রামকৃষ্ণ সেতুর পাশে নদীর উপর দিয়ে একটি অস্থায়ী সেতু তৈরি করতে এদিন পরিদর্শন করেন ইঞ্জিনিয়ার ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। পরে তাঁরা বৈঠকও করেন। সেখানে বিকল্প সেতু তৈরি নিয়ে আলোচনাও হয়। এদিন পরিদর্শনে পূর্তদপ্তরের হুগলির এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জ্যোতিপ্রকাশ ধর, আরামবাগের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সমর দত্ত ছাড়াও সেচ, পূর্ত, পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়াররাও ছিলেন।
পূর্তদপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, রামকৃষ্ণ সেতুর মেরামতির জন্য তার পাশে যান চলাচলের জন্য একটি অস্থায়ী সেতু তৈরি করা হবে। বর্ষার আগে সেতুর কাজ করে তা ভেঙে ফেলাও হবে। সেতুতে কাজ চলার সময় শুধু ওই অস্থায়ী অংশ দিয়ে যান চলাচল করবে। সেজন্য এদিন তাঁরা সব দিক খতিয়ে দেখেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পল্লিশ্রী থেকে কালীপুর যাওয়ার পথে রামকৃষ্ণ সেতুর ডান পাশে অস্থায়ী সেতুটি তৈরি করা হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে তার কাজ সম্পন্ন করে রামকৃষ্ণ সেতুর পূর্ণাঙ্গ মেরামতি করার পরিকল্পনা নিয়েছে পূর্তদপ্তর। কিন্তু দ্বিতীয় সেতু কবে হবে? তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। আরামবাগের বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও বাস মালিক সংগঠনের দাবি, রামকৃষ্ণ সেতুর ভার বহন ক্ষমতা কমে এসেছে। বয়সেও প্রবীণ রামকৃষ্ণ সেতু। অথচ প্রত্যেক দিন রামকৃষ্ণ সেতুতে যান চলাচলের সংখ্যা বাড়ছে। অনেক আগেই পূর্তদপ্তর সেতুটিকে বিপজ্জনক ঘোষণা করে বোর্ড লাগিয়েছে। গত ৯ আগস্ট রাতে রামকৃষ্ণ সেতুর গার্ডওয়ালের একাংশ ভেঙে পড়ে। তারপরই সেতুতে বাস সহ ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় আড়াই মাস পর বাস ধর্মঘটের জেরে রাজ্যের তরফে বাস চলাচলে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। হাইটবারের উচ্চতা বাড়ায় প্রায় সব রুটেরই বাস চলছে। কিন্তু বেহাল এই রামকৃষ্ণ সেতুর পর দ্বিতীয় ব্রিজ তৈরির কাজ কবে শুরু হবে, তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
হুগলি ইন্টার রিজিয়ন বাস অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মির্জা গোলাম মোস্তফা বলেন, আরামবাগের সঙ্গে কয়েকটি জেলাকে সংযুক্ত করেছে রামকৃষ্ণ সেতু। তাই পরিবহণের ক্ষেত্রে এই সেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রামকৃষ্ণ সেতুর বিপর্যয়ের পর আমাদের ক্ষতি হয়েছে। অবশেষে প্রশাসন বাস চালানোর অনুমোদন দেওয়ায় কিছুটা সুবিধা হয়েছে। তাই আগামী দিনে দুর্ভোগ থেকে বাঁচাতে দ্বিতীয় সেতু অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। পূর্তদপ্তরের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, দ্বিতীয় সেতু তৈরির জন্য প্রাথমিক কাজ কয়েক বছর আগে শুরু করা হয়েছিল। তারপর আর এগয়নি। বর্তমানে রামকৃষ্ণ সেতুর বিপর্যয়ের পর দ্বিতীয় সেতু নিয়ে আলোচনা চলছে।