বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: বুধ ও বৃহস্পতিবার ভাইফোঁটা। দেশজুড়ে ভাইদের মঙ্গল কামনায় ফোঁটা দেবেন বোনেরা। তার মধ্যেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের দিল্লিতে তলব করল নির্বাচন কমিশন। দু’দিন বৈঠক হবে বলে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের চিঠি পাঠানো হল। মনে করা হচ্ছে, ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে আলোচনা করতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। আবার, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ নিয়ে চলা রাজনৈতিক তরজার মাঝেই বড় পদক্ষেপ করল নির্বাচন কমিশন।
হঠাৎ করে সমস্ত রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে দু’দিনের জন্য বৈঠকে ডেকে পাঠিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার চিঠি পাঠিয়ে কমিশন জানিয়েছে, দিল্লিতে ওই বৈঠক হবে বুধ এবং বৃহস্পতিবার। সিইও-দের সঙ্গে থাকবেন রাজ্যের তাঁর দপ্তরের অন্য সিনিয়র আধিকারিকরা। বিহারে বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা শেষ হতেই ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়েছে। এবার সেই সূত্র ধরেই জল্পনা, বাংলাতেও কি এসআইআর শেষ হলেই ঘোষণা হবে বিধানসভা ভোট? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই কি তবে দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই বৈঠক হচ্ছে?
দেশের সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসবেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। সূত্রের খবর, বাংলার পরিস্থিতিও এই বৈঠকের অন্যতম আলোচ্য বিষয়। বিহারে এসআইআর নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছিল। তবে কমিশনের বক্তব্য ছিল, “ভোটার তালিকা স্বচ্ছ করতেই এসআইআর প্রয়োজন।” এর পর থেকেই জল্পনা—বিহারের মতো কি অন্য রাজ্যেও হবে বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা? কমিশন জানায়, দেশজুড়েই হবে এসআইআর, তবে প্রথমে যেখানে ভোট আসন্ন, সেখানেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ শুরু হবে।
বাংলায় প্রায় সাত মাস পর বিধানসভা নির্বাচন। ফলে এসআইআর নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। বিজেপির দাবি, এসআইআর শেষ হলেই বাংলায় ভোট। অপরদিকে তৃণমূলের অভিযোগ, এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ। এমনকী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও স্পষ্ট বলেছেন, “বাংলায় এসআইআর হবেই।” নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপেই স্পষ্ট, বাংলায় এসআইআর নিয়ে তারা তৎপর। গত সপ্তাহেই জেলাগুলিকে দ্রুত ‘ম্যাপিং অ্যান্ড ম্যাচিং’ প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় ২০০২ সালের ভোটার তালিকা ও ২০২৫ সালের তালিকার তুলনা করে দেখা হবে কোথায় কত পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি এসআইআর প্রক্রিয়াকে আরও নির্ভুল করতে সাহায্য করবে। সূত্রের খবর, কমিশন চাইছে যত দ্রুত সম্ভব বাংলায় এসআইআর শুরু করতে। পাশাপাশি আর কোন কোন রাজ্যে সমীক্ষা চালু হতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা হবে আসন্ন বৈঠকে। তাই নির্বাচন কমিশনের এই দুই দিনের বৈঠকের ফলাফলের দিকেই এখন তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। বৈঠক শেষে বাংলায় এসআইআর শুরুর ঘোষণা হয় কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।