চিত্তরঞ্জন দাস: বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর ধর্ষণ কাণ্ডে (Durgapur Medical student case) নতুন মোড়, টিআই প্যারেডের (TI Parade) নির্দেশ বিচারকের, আগামী ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতে (Jail Custody of Durgapur rape case accused) অভিযুক্তরা।
আইকিউ সিটি মেডিকেল কলেজে (IQ City Medical College Durgapur) চিকিৎসক ছাত্রী নির্যাতন কাণ্ডে তদন্তে বড় অগ্রগতি। মঙ্গলবার দুর্গাপুর মহকুমা (Durgapur Magistrate Court) আদালতে মামলার শুনানিতে বিচারক অভিযুক্তদের টেস্ট আইডেন্টিফিকেশন (টি আই) প্যারেডের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন খারিজ করে আগামী ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাবলিক প্রসিকিউটর বিভাস চ্যাটার্জির বক্তব্য, তদন্তকারীরা অভিযুক্ত চিকিৎসক পড়ুয়ার সহপাঠীর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট সিজ করে বিচারকের সামনে তুলে ধরার কথা বলেন। বিচারক নিজে সেই সিজ করা চ্যাট পর্যবেক্ষণ করেন।
সেই চ্যাটের ভিত্তিতে তদন্তের পরবর্তী ধাপের দিকনির্দেশ পাওয়া যাবে বলে দাবি। প্রসঙ্গত, তিনজন অভিযুক্ত দশ দিনের পুলিস হেফাজতে ছিল, দুজন নয় দিনের এবং সহপাঠী ওয়াসেফ আলি অভিযুক্ত সাত দিনের পুলিস হেফাজতে ছিল। আজ বুধবার সকলকে চারজনকে আদালতে পেশ করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাঁদের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিচারকের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ২৪ অক্টোবর জেলেই টিআই প্যারেড হবে। সহপাঠী অভিযুক্তকে ছাড়া বাকি পাঁচজনকে সেদিন পরিচয় পর্বের (Test Identification Parade) জন্য হাজির করা হবে। এদিকে, মামলায় পুলিসের দাবি, টিআই প্যারেডের ফলাফল তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
অভিযুক্তদের মুখোমুখি সাক্ষী ও ধর্ষিতা চিকিৎসক পড়ুয়াকে আনা হবে, তবে প্রক্রিয়াটি হবে বিচারকের তত্ত্বাবধানে। সরকারপক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'তদন্তের স্বার্থে আমরা ধর্ষণের আগে চিকিৎসক পড়ুয়ার সঙ্গে সহপাঠীর কথোপকথনের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট বিচারকের সামনে তুলে ধরেছি। টি আই প্যারেডের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। বিচারক ২৪ তারিখ টিআই প্যারেডের নির্দেশ দেন। সব অভিযুক্তদেরই কোনো না কোনো ভাবে যোগ আছে।'
অন্যদিকে অভিযুক্ত সহপাঠীর উকিল প্রজ্ঞাদীপ্ত রায় বলেন, দুজনের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। কোনোভাবেই দোষী নয় ওয়াসিফ আলিঁ।
এর আগে, গ্রেফতার হয়েছেন নির্যাতিতার বন্ধুও। তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু প্রমাণ সংগ্রহের পরই, মঙ্গলবার নির্যাতিতার সহপাঠীকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। সূত্রের খবর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নির্যাতিতা অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন রাতে ওয়াসিফ আলী নির্যাতিতার সহপাঠী ওই যুবকও তাঁর উপর জোর করার চেষ্টা করেছিল। এই নিয়ে এই মামলায় গ্রেফতারির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬। যদিও পুলিসের দাবি, দুর্গাপুরের ঘটনা 'গণধর্ষণ নয়, এটি ধর্ষণ, একজনেরই কাজ।' ওদিকে নির্যাতিতার বয়ানে উঠে এসেছে ভয়ংকর তথ্য।
নির্যাতিতা মেডিক্যাল পড়ুয়া দাবি করেছেন যে, তিনি যখন তাঁর সহপাঠীর সঙ্গে রাতের খাবার আনার জন্য ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়েছিলেন, তখনই তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বর্বরের দল। তাঁকে জঙ্গলে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতিতা জানিয়েছেন, ৩ জন মিলে তাঁকে ও তাঁর বন্ধুকে ধাওয়া করে তুলে নিয়ে যায়। জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায়। এমনকি চিৎকার করলে আরও পুরুষদের ডেকে আনবে ও তারাও নির্যাতিতাকে ধর্ষণ করবে বলেও হুমকি দেয়।