• বনেদি পরিবারের ২৫০ বছরের কালীর গয়না চুরি! একালের ফেলুদার তদন্তে জালে চোর, বিরাট ঝটকা...
    ২৪ ঘন্টা | ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • পার্থ চৌধুরী: কালীপুজোর রাতে চক্ষুদান করে শ্রীঘরে এক নিমন্ত্রিত! প্রতিমার গায়ের গহনা হাতসাফাই করার অভিযোগে মেমারি থানার পুলিস আজ তাকে বর্ধমান আদালতে চালান করেছে।এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের রসুলপুরের ব্যানার্জি পরিবারে।  আড়াইশো বছরের বিখ্যাত কালীপুজোয়।

    একেই বলে সর্যের মধ্যেই ভূত! বিশেষ বন্ধু হিসেবে দ্বিতীয়বার পুজো দেখতে আসা ব্যক্তিই যে এমন কাজ করবে ভাবতে পারেননি পরিবারের কেউ!

    মায়ের গহনা খোওয়া যাওয়ায় হুলস্থুল পড়ে যায়। মাথায় হাত পড়ে যায় এলাকার মানুষের। আড়াইশো বছরের পুরনো এই জাগ্রত কালী। পারিবারিক হলেও সবাই একে মানেন। তার গহনায় চক্ষুদান! হামারে জেল মে সূড়ঙ্গ!

    ঘটনার বর্ণনা বেশ রোমাঞ্চকর! 

    ঘড়ির কাঁটা তখন রাত ১২ টা ছুঁয়েছে। সবে মা কালীর পুজোর শেষ হয়েছে। এবারে তো গোটা রাত পুজো। পরিবারের অনান্য সদস্যরাও পরিবারের আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়নে ব্যস্ত। প্রতিবারই এ পরিবারের ডাকে অনেকেই আসেন দেবীদর্শনে।

    হঠাৎ করেই পরিবারের এক সদস্যা লক্ষ্য করেন দেবীর বেশ কিছু গহনা দেবীর দেহে নেই। পরিমাণ প্রায় দশ ভরি। দামের কথা ধরলে ১০ লাখের বেশি। আবেগের মূল্যে অমূল্য! সবার অলক্ষ্যে তা হাতসাফাই হয়ে গেছে!

    ছড়িয়ে পড়ে এক অদ্ভুত অনুভূতি। শুরু হয় জল্পনা কল্পনা। বিহ্বলতা কাটিয়ে  পরিবারের পক্ষ থেকে মেমারি থানায় জানানো হয়। পরে জানান হয় লিখিত অভিযোগ। 

    এই পরিবার রসুলপুরের দলুইবাজারের বন্দ্যেপাধ্যায় পরিবার।২৫০ বছর ধরে পরিবারে হয়ে আসছে কালীপুজো।কালীপুজোতে পরিবারের সদস্যরা যেমন উপস্থিত থাকেন, তেমনি আমন্ত্রিত ও থাকেন বেশ কিছু বিশেষ মানুষও।


    সেরকমই পরিবারের এক মহিলা সদস্যের বিশেষ বন্ধু হিসাবে আমন্ত্রিত ছিলেন দেবজ্যোতি চৌধুরী। জানা গেছে, সব ঠিক চললে কিছুদিন পরেই এই পরিবারের আত্মীয় হয়ে যাবার কথা তার। সবাই যখন নানা কথা ভাবছেন।


    তখনই তার নানা আচরণ মনে পড়ায় পরিবারের এক সদস্যার সন্দেহ জাগে। পুলিশকে তা জানান হয়।

    এদিকে মেমারি থানার পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে পরিবারের এক সদস্যের বন্ধু হিসাবেই  দেবজ্যোতি উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, ঘটনাস্থলে পুলিশের উপস্থিতি দেখে ততক্ষনে গা ঢাকা দিয়েছেন শ্রীমান দেবজ্যোতি। খোঁজ পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই ভেঙে পড়েন দেবজ্যোতি।  পরে তাঁর কাছে থেকে উদ্ধার হয় দেবীর চুরি যাওয়া গহনা গুলো। এরপরই মেমারি থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার  তাকে বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। 

    জানা গেছে,  দেবজ্যোতির বাড়ি বর্ধমানের খোশবাগানে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পুজো দেখতে এসেছিলেন তিনি। কখন যেন ভক্ত থেকে হয়ে গেলেন তস্কর!পুজোর নিমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে এসে পুজোর  শেষে  পরিবারের বিশেষ বন্ধু কখন যেন  ঠাকুরের গহনা চুরি করে পিঠটান  দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ধরা পড়ে গেলেন পুলিশের জালে।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)