বাবার সঙ্গে স্ত্রীর যৌন সম্পর্ক! মৃত্যুর আগে ছেলের ভিডিও পোস্টে বিপাকে প্রাক্তন ডিজি ও মন্ত্রী
প্রতিদিন | ২২ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঞ্জাব পুলিশের প্রাক্তন ডিজি-র ছেলের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগের তির খোদ তাঁর বাবার বিরুদ্ধেই। বাবার সঙ্গে স্ত্রীর যৌন সম্পর্ক মানতে না পেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন ৩৩ বছর বয়সি ছেলে আকিল আখতার? এই মারাত্মক তথ্য সামনে আসতেই স্বয়ং ডিজি-র বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। ছেলেকে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে পাঞ্জাব পুলিশের প্রাক্তন ডিজি মহম্মদ মুস্তাফা এবং তাঁর স্ত্রী পাঞ্জাবের কংগ্রেস নেত্রী, প্রাক্তন মন্ত্রী রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে। মৃত আকিলের অভিযোগ ছিল, “বিয়ের আগেই স্ত্রী ও বাবা একে অপরকে চিনতেন। বিয়ের পর প্রথম দিনই স্ত্রী আমাকে স্পর্শ করতে দেয়নি। আসলে সে আমাকে নয়, বিয়ে করেছে আমার বাবাকে।” এই ধরনের একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ ঘিরেই শুরু হয়েছে তোলপাড়। যদিও পরে ওই মন্তব্য অস্বীকার করেছিলেন আকিল। পাশাপাশি, আকিলের কিছু ভিডিও, ছবি সন্দেহ বাড়িয়েছে। তার ভিত্তিতেই এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রীপুত্র বছর তেত্রিশের আকিলকে পঞ্চকুল্লার বাড়ি থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরিবারের লোকেরাই হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা আকিলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের দাবি ছিল, মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ খেয়ে ফেলায় মৃত্যু হয়েছে আকিলের। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশও দাবি করে, আকিলের নানা রকম শারীরিক সমস্যা ছিল। ওষুধ খাওয়ার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়ে মৃত্যু হয়। আকিলের মৃত্যুকে পরিবারের লোকেরাও স্বাভাবিক বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ঘটনা মোড় নেয় আকিলের কয়েকটি ভিডিও পোস্টে। আগস্ট মাসে রেকর্ড করা এক ভিডিওতে আকিল অভিযোগ করেন, তাঁর স্ত্রী এবং বাবার মধ্যে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। আকিলের বক্তব্য, “আমার স্ত্রীর সঙ্গে বাবার সম্পর্কের কথা জানতে পেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। আতঙ্কে আছি। প্রতিদিন মনে হয়, ওরা মিথ্যা মামলায় ফাঁসাবে। আমার মা রাজিয়া এবং বোনও এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত।” যদিও পরবর্তী সময়ে অন্য ভিডিওতে আকিল সম্পূর্ণ উল্টো কথা বলেন। জানান, তিনি স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় ভুগছিলেন এবং পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন।
প্রতিবেশী শামসুদ্দিন চৌধুরির দায়ের করা অভিযোগ এবং গত ২৭ আগস্ট আকিলের রেকর্ড করা ১৬ মিনিটের ভিডিও ঘিরে এই মৃত্যু নিয়ে ষড়যন্ত্রের সন্দেহ জোরালো হয়েছে। আকিলের এক পারিবারিক বন্ধুও অভিযোগ করেন, মারাত্মক মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন আকিল। নিজেদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখার জন্য আকিলকে ‘পাগল’ বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করতেন বাড়ির লোকেরা। কোনও মানসিক সমস্যা না থাকলেও জোর করে তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁকে রিহ্যাব সেন্টারে নিয়ে গিয়ে তাঁকে বন্দি করে রেখেছিল। পাঞ্জাব পুলিশের ডেপুটি কমিশনার সৃষ্টি গুপ্তা জানিয়েছেন, আকিলের মৃত্যুর পর প্রথমে কোনও সন্দেহ হয়নি। একটি অভিযোগ পাওয়ার পরই আকিলের মৃত্যুর কারণ নতুন করে খতিয়ে দেখে সেই সূত্রেই এফআইআর করা হয়েছে পাঞ্জাব পুলিশের প্রাক্তন শীর্ষ কর্তা মহম্মদ মুস্তাফা এবং তাঁর স্ত্রী রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগকারী শামসুদ্দিন পরিবারটির ঘনিষ্ঠ। তাঁর দেওয়া তথ্য এবং আকিলের ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করছে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)।