সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীপাবলির পর দিনই ভয়াবহ দুর্ঘটনা মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে। ৩০০ বছরের ঐতিহ্য মেনে ‘হিংগোট যুদ্ধ’ পালন করার সময় আগুনে ঝলসে গেলেন ৩৫ জন। মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে ইন্দোরের গৌতমপুরা গ্রামে। আহতদের তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, সাহসের প্রতীক হিসেবে পালিত হওয়া এই উৎসব দেখতে এবারও জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। তুরা ও কালাঙ্গি নামে দুই দলের মধ্যে বাজির লড়াই (যুদ্ধ)। নিয়ম অনুযায়ী, যোদ্ধারা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ঢাল হাতে যুদ্ধে নামেন। এরপর বারুদ ভর্তি শুকনো হিংগোট ফলে আগুন দিকে একে অপরের দিকে ছুড়তে থাকেন। এই আগুনেই ঝলসে যান ৩৫ জন। এই অনুষ্ঠানে দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের তরফে ফায়ার ব্রিগেড অ্যাম্বুল্যান্স ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তারপরও দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আধঘণ্টা আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয় এই বিপজ্জনক যুদ্ধ।
উল্লেখ্য, ‘হিংগোট যুদ্ধে’র সূচনা হয়েছিল মুঘল আমলে। মুঘল-মারাঠা যুদ্ধকে (১৬৮০-১৭০৭) স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছর পালন করা হয় এই অনুষ্ঠান। গৌতমপুরা এবং রুঞ্জি এলাকার মানুষ ‘তুরা’ ও ‘কালাঙ্গি’ নামে দুটি দল গঠন করে ঢাকের আওয়াজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধে নামেন। যা দেখতে ভিড় জমান হাজার হাজার দর্শক। যার জেরে মাঝে মাঝে এখানে দুর্ঘটনাও ঘটে। ২০১৭ সালে এই উৎসবে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় এই প্রথা নিষিদ্ধ করার দাবি মামলা দায়ের হয়। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে এটিকে “অমানবিক ও প্রাণঘাতী” বলে অভিহিত করে। তবে গ্রামবাসীরা এখনও এই প্রথা টিকিয়ে রেখেছেন।