• টার্গেট নীতীশের মহিলা ভোটব্যাঙ্ক! ‘জীবিকা দিদি’দের নিয়ে বড় ঘোষণা তেজস্বীর, ‘উপহার’ মা-বোনেদের
    প্রতিদিন | ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু’সপ্তাহের মধ্যেই বিহারে হবে বিধানসনভা নির্বাচন। সেই ভোট ঘিরেই শুরু হয়েছে একেরপর প্রতিশ্রুতির বন্যা। বিশেষজ্ঞদের মত, রাজ্যে মদ বিক্রি বন্ধ করার পর থেকে মহিলা ভোটের ঝোঁক নীতীশের জেডি(ইউ)-এর দিকে রয়েছে। এবার সেই ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতে মঙ্গলবার রাজ্যের মহিলা ভোটারদের জন্য বহু নতুন ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রীয় জনতা দল।

    এই ঘোষণাগুলির মধ্যে শুরুতেই রয়েছে জীবিকা দিদিদের কথা। আরজেডি জানিয়েছে, জীবিকা দিদি হিসেবে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের চুক্তিভিত্তিক চাকরি পাকা করা হবে। তাঁদের মাইনে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা করা হবে। পাশপাশি, ২০২৭ সাল পর্যন্ত তাঁদের ঋণে সুদ ছেড়ে দেওয়া হবে।

    আরজেডি আরও জানিয়েছে, ‘দিদি’দের অতিরিক্ত ২০০০ টাকা ভাতা দেওয়া হবে এবং সরকার তাদের সকল ক্যাডারের জন্য ৫ লক্ষ টাকার বীমা কভারেজ নিশ্চিত করবে।

    এই প্রস্তাবে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের প্রশাসনের ‘দিদিদের প্রতি করা অন্যায়ে’র সমালোচনা করা হয়েছে। তেজস্বী ঘোষণা করেন, “‘জীবিকা দিদি’ ছাড়া গ্রামে বা শহরে কাজ করা সম্ভব নয়। কিন্তু তারা কিছুই পায় না… এটা আমাদের দায়িত্ব, কারণ এই সরকার তাদের সেবা করে না। জনগণের দুর্দশার প্রভাব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের উপর পড়ে না।”

    এখানেই থামেননি আরজেডি নেতা। তেজস্বী যাদব মহিলাদের জন্য “মাই-বহেন মান যোজনা”-র প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই যোজনার আওতায়, মহিলাদের পাঁচ বছর ধরে প্রতি মাসে ২ হাজার ৫০০ টাকা অথবা বার্ষিক ৩০ হাজার টাকা সহায়তা পাবেন। এতে, পাঁচ বছরে মোট ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে। এর সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘বেটি আয় যোজনা’ নামের একটি নতুন প্রকল্প চালু করা হবে। এই প্রকল্পে সরকার একজন কন্যা সন্তানের জন্ম থেকে উপার্জন করার বয়স পর্যন্ত টাকার ব্যবস্থা করবে। তেজস্বী বলেন, “একজন কন্যা সন্তানের জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই সরকার তার শিক্ষা এবং ভবিষ্যতের দায়িত্ব নেবে যাতে দারিদ্র্যের কারণে কোনও কন্যাকে নিজের স্বপ্নের সঙ্গে আপস না করতে হয়।”

    তেজস্বীর তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা ছিল ‘মা প্রকল্প’ এবং গৃহ-অন্ন সুরক্ষা। তেজস্বী যাদব বলেন, মা যোজনার আওতায় দরিদ্র মহিলাদের স্থায়ী বাসস্থান, খাদ্য নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীল আয়ের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, “প্রত্যেক মা একটি বাড়ি পাবে, প্রতিটি মেয়ে শিক্ষা পাবে এবং প্রতিটি বোন সম্মান পাবে, এটাই আমাদের অঙ্গীকার।”

    তেজস্বীর এই ঘোষণার পালটা কোনও ঘোষণা করেনি জেডিইউ। যদিও তাঁরা মহিলা ভোটের জন্য নিজেদের দলের প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছে। তাঁদের প্রতিশ্রুতিতে বলা হয়েছে মাই বহেন যোজনায় মহিলাদের ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি, বিধবা ভাতা ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৪০০ টাকা করা হবে। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনে মহিলাদের ৫০ শতাংশ কোটা থাকবে।

    বিজেপি-জেডিইউ জোটের বর্তমান সরকার ৯৫ হাজার আশা কর্মী এবং ৪ হাজার ৬০০ মমতা কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করেছে।

    বিহারে মহিলা ভোটার প্রায় ৩.৫ কোটি। বিহারের মহিলা ভোটাররা নীতিশ কুমারের ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবেই পরিচিত। বিশেষজ্ঞদের ধারণা ২০২০ সালের মতোই এই নির্বাচনেও মহিলা ভোটাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। গত নির্বাচনে, বিজেপি-জেডিইউ জোট ৬০.৫ শতাংশ আসন জিতেছিল যেখানে যেখানে ভোটারদের সংখ্যা পুরুষদের তুলনায় বেশি ছিল। আরজেডি এবং কংগ্রেসের মহাগঠবন্ধন এই ভোটব্যঙ্কেই ভাগ বসাতে চেষ্টা করবে এই।
  • Link to this news (প্রতিদিন)