দীর্ঘ লড়াই শেষ, আত্মীয়র বাড়ি থেকে ফিরতে গিয়ে পদপিষ্ট, বর্ধমান-কাণ্ডে মৃত আরও এক
আজকাল | ২৩ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল অয়েবডেস্ক: দীর্ঘ লড়াইয়ের অবসান। প্রাণ বাঁচল না। বর্ধমান কাণ্ডে মৃত আরও এক। গত ১২ অক্টোবর বর্ধমান স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় মৃত্যু হল রেল যাত্রীর। মৃত যাত্রীর নাম অপর্ণা মণ্ডল। বয়স ৫৭। বাড়ি হুগলি জেলার উত্তরপাড়ার হরিসভার ২ নম্বর বাকলায়। দুর্ঘটনার পর থেকেই অপর্ণা মণ্ডল ভর্তি ছিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
দুর্ঘটনার দিন সন্ধেয় গুরুতর জখম অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের আই সি ইউ-তে ভর্তি করা হয় তাঁকে। হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় সোমবার সকাল সাতটা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর আহত অবস্থায় আটজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যদিও এই মুহূর্তে আর কেউ হাসপাতালে ভর্তি নেই। জখম যাত্রীরা সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ঘরে।
মৃতার ভাইপো বাপন মণ্ডল জানান, অপর্ণা মণ্ডল বর্ধমান শহরের নীলপুরে এক আত্মীয়র বাড়ি গিয়েছিলেন। উত্তরপাড়া ফেরার জন্য বর্ধমান স্টেশনে ট্রেন ধরতে গিয়ে সিঁড়িতে পদপিষ্ট হন। রবিবার সন্ধেয় বর্ধমান রেল স্টেশনে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। স্টেশন চত্বরে ভিড়ের মধ্যে পদপিষ্ট হয়ে আহত হন একাধিক যাত্রী। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তৎক্ষণাৎ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় রেল স্টেশন চত্বরে।
পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত জানিয়েছিলেন, এক মহিলা যাত্রী চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে নামার সময় ভারসাম্য হারিয়ে সিঁড়িতে পড়ে যান। তাঁর সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন যাত্রীও টাল সামলাতে না পেরে নীচে পড়ে যান। ঘটনার পরপরই প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (RPF) এবং রেলকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের সাহায্য করেন।
স্টেশনে কর্তব্যরত রেলওয়ে চিকিৎসকরা সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন আহতদের। প্রত্যক্ষদর্শী এক দোকানদার বিকি রাউত জানান, ‘তখন চার, ছয় ও সাত নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ছিল। চার নম্বরে বর্ধমান-হাওড়া মেন লাইন, ছ’নম্বরে রামপুরহাট লোকাল আর সাত নম্বরে আসানসোল লোকাল দাঁড়িয়ে ছিল। ট্রেন ধরতে গিয়েই হুড়োহুড়ি শুরু হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সিঁড়িটা খুব ছোট, আর একই সময়ে রামপুরহাট ও আসানসোলের প্যাসেঞ্জারসহ হাওড়া লোকাল ধরার জন্য যাত্রীদের ভিড় বেড়ে যায়। সেই চাপেই কয়েকজন পড়ে গিয়ে পদপিষ্ট হন।’ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ জানিয়েছিলেন, গোটা ঘটনায় সাতজন আহতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এক আহতের স্বামী অরূপ দাস জানিয়েছিলেন সেদিন, 'ওঠানামার হুড়োহুড়িতে পড়ে যাই আমরা।' কিছু মানুষ ছিটকে পড়েন। এক মহিলা সাফাইকর্মী জানান, ওই সময় তিনটি ট্রেন এসে পড়ে। অনেকে নামতে চান। ট্রেন ধরবেন। কিছু মানুষ ফেরার তাড়ায় ছিলেন। সিড়িটা ছোট হওয়ায় এমন ঘটে যায়।