• বাঁকে বিহারী মন্দিরের তোষাখানা থেকে উধাও ‘শ্রীকৃষ্ণে’র সম্পত্তি! সিবিআই তদন্ত দাবি পুরোহিতদের
    প্রতিদিন | ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃন্দাবনের বাঁকে বিহারী মন্দিরের তোষাখানায় উদ্ধার সম্পত্তিতে গরমিল। উধাও হয়ে গিয়েছে শ্রীকৃষ্ণের সম্পত্তি! বিস্ফোরক অভিযোগ মন্দিরের পুরোহিতদেরই একাংশের। বাঁকে বিহারী মন্দিরের সম্পত্তি উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে তদন্ত এবং সম্পত্তির উপযুক্ত নথি তৈরির জন্য সিবিআই তদন্তের দাবি করছেন তারা।

    শনিবারই বিখ্যাত ওই মন্দিরের তোষাখানা খোলা হয়েছে। শেষবার মন্দিরের গর্ভগৃহ সংলগ্ন এই তোষাখানা খোলা হয়েছিল ১৯৭১ সালে। এই গুপ্ত ভাণ্ডারে কী রয়েছে তা নিয়ে জল্পনা চরম আকার নেয়। এই পরিস্থিতিতে তোষাখানায় সমীক্ষা চালাতে ১২ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এই কমিটির প্রধান ছিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক কুমার। গত শনিবার এই কমিটির উপস্থিতিতে ভাঙা হয় তোষাখানার তালা। কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি পুলিশ, আধিকারিক-সহ চারজন পুরোহিত সেখানে প্রবেশ করেন। প্রাথমিকভাবে সেখানে কিছু না পাওয়া গেলেও নজরে পড়ে একটি গুপ্তকক্ষ। রবিবার সেখানে প্রবেশের পর পাওয়া গিয়েছে বেশ কিছু মূল্যবান সামগ্রী।

    মন্দিরের পুরোহিত দীনেশ গোস্বামী ছিলেন এই সমীক্ষক দলের সঙ্গে। তিনি বলেন, তোষাখানায় একটি ৩-৪ ফুট লম্বা বাক্স উদ্ধার হয়েছে। যেখানে একটি সোনার বার, তিনটি রুপোর বার। যাতে আবির মাখানো ছিল। এছাড়াও পাওয়া গিয়েছে বেশকিছু লাল ও সবুজ রঙের মূল্যবান পাথর ও বহু মূল্যবান কয়েন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধাতুর তৈরি প্রচুর বাসনপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে এই সব বাসনপত্র ঠাকুরজি (ভগবান কৃষ্ণ) ব্যবহার করতেন। এছাড়া সেখানে আরও বহু বাক্স পাওয়া গিয়েছে যার বেশিরভাগই এখনও খোলা সম্ভব হয়নি। উদ্বেগের বিষয় হয় কোষাগারের ভিতরে থাকা বহু সম্পত্তির নথিপত্র এখনও পাওয়া যায়নি। ইতিহাসবিদদের দাবি, ১৯ শতকের এই মন্দিরের নথিতে বহু রাজপরিবারের তরফে বহু মূল্যবান সামগ্রী দান করা হয়েছে। সেই সমস্ত উপহার ও জমির মালিকানার সমস্ত নথি ছিল তোষাখানায়। দীনেশ গোস্বামীর মতে, কোষাগারের ভেতরে পাওয়া জিনিসপত্রের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি দুই দিন ধরে ভিডিও করা হয়েছে। তিনি বলেন, কোষাগারের ভেতরে পরিদর্শন সম্পন্ন হয়েছে। অনুসন্ধানের জন্য আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।

    দীনেশের অভিযোগ, বহু দশক ধরে শ্রীকৃষ্ণের সম্পত্তি তছরুপ হয়েছে। সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় বহু সম্পত্তি উধাও হয়ে গিয়েছে। এই তোষাখানা কেন ১৯৭১ থেকে বন্ধ রাখা হল? সবটা নিয়ে সিবিআই তদন্ত হওয়া দরকার। একই সুর মন্দিরের আর এক পুরোহিত দীনেশ ফলহারিরও। তিনি ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি লিখে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “যে মন্দিরের সম্পত্তি পাকিস্তানেও থাকার কথা, সেই মন্দিরের সম্পত্তিরও সঠিক নথি নেই। এখন যে ফাঁকা বাক্সগুলি পাওয়া যাচ্ছে সবটাই কর্তৃপক্ষের গাফিলতি।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)