ফোঁটার আনন্দ ম্লান, বাঁকুড়ায় জামাইবাবুকে নিয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু শ্যালকের!
প্রতিদিন | ২৩ অক্টোবর ২০২৫
অসিত রজক, বাঁকুড়া: জামাইফোঁটার দিনে আনন্দের বদলে নেমে এল শোকের ছায়া। ভাইফোঁটার আগের দিন জামাইফোঁটার প্রথা প্রচলিত রয়েছে বাঁকুড়ায়। শ্বশুরবাড়িতে সেই ফোঁটা নেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন জামাই। শ্যালকের মোটরবাইকে চড়ে যাওয়ার সময় মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা। লরির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল শ্যালকের। মৃতের নাম গণেশ সর্দার। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বিষ্ণুপুর থানার আধকাটা সংলগ্ন এলাকায়।
বুধবার সকালে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার বেলশুলিয়া পঞ্চায়েতের বনগেলিয়া গ্রামে। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মৃতের জামাইবাবু দীনবন্ধু সর্দার এবং বন্ধু শুকদেব পণ্ডিত। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা থানার বাসদা মোহনপুর এলাকার বাসিন্দা দীনবন্ধু সর্দার জামাইফোঁটার উপলক্ষে এদিন সকালে শ্বশুরবাড়ি বনগেলিয়া যাচ্ছিলেন। তিনি বাসে করে বাকাদহ বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছন। সেখানে তাঁর শ্যালক গণেশ সর্দার এবং গণেশের বন্ধু শুকদেব পণ্ডিত বাইকে করে তাঁকে আনতে যান। তিনজন একই বাইকে করে ফেরার সময় আধকাটা গ্রামের কাছে একটি লরির সঙ্গে বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। প্রচণ্ড ধাক্কায় বাইকটি লরির তলায় ঢুকে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান গণেশ সর্দার। গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে থাকেন দীনবন্ধু ও শুকদেব।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। দু’জন জখমকে উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
পুলিশ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বিষ্ণুপুর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। ঘাতক লরিটিকে আটক করা হয়েছে। এদিন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিষ্ণুপুর) মাকসুদ হাসান ও বিষ্ণুপুর থানার আইসি অতনু সাঁতরা-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ বনগেলিয়া গ্রাম। পরিবারের সদস্যদের কান্নায় ভেঙে পড়েছে গোটা এলাকা। গ্রামের এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “জামাইফোঁটার আনন্দ মুহূর্তে পরিণত হল শোকে। এমন দিনেও এমন দুর্ঘটনা, সহ্য করা কঠিন।” ঘাতক গাড়িটিকে আটক করা হয়েছে চালক ও খালাসি পলাতক।