পুজোর অনেক আগেই শুরু হয়েছিল ধরপাকড়। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার কেজি শব্দবাজি। সিল করে দেওয়া হয়েছে গুদাম। ৪৫টি মামলা হয়েছে বেআইনি বাজি নিয়ে। ৪২ জন বাজির কারবারি গ্রেফতার হয়েছেন। এ সবই কালীপুজোর আগের খতিয়ান। প্রশাসন দাবি করেছিল, এ বার কালীপুজোয় বেআইনি শব্দবাজিতে রাশ টানা গিয়েছে। যদিও বাস্তব চিত্র দেখা গেল, তার ঠিক উল্টোটাই।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বহু এলাকায় শব্দবাজির তাণ্ডবে সোমবার, কালীপুজোর সন্ধ্যা থেকেই অনেকের নাজেহাল অবস্থা। মঙ্গলবারও ছিল একই পরিস্থিতি। থানায় অবশ্য লিখিত অভিযোগ খুব বেশি দায়ের হয়নি। কেউ সমাজমাধ্যমে লিখলেন শব্দ-তাণ্ডবের কথা, কেউ পরিচিতদের কাছে খেদ প্রকাশ করলেন। কিন্তু প্রশ্নটা রয়েই গেল, এত ধরপাকড়ের পরেও শব্দবাজির এই রমরমা কেন? নীলগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা, সমাজকর্মী গীতা মিশ্র বললেন, ‘‘পশু-পাখিদের শ্রবণেন্দ্রিয় মানুষের চেয়ে অনেক বেশি সংবেদনশীল। এই শব্দবাজি মারাত্মক ক্ষতিকারক ওদের পক্ষে।’’
কাঁচরাপাড়া ও শিবদাসপুরে একাধিক বাজি কারখানা আছে। পুলিশ পুজোর আগের দু’মাসে সেগুলির উপরে নজরদারি ও একাধিক অভিযান চালিয়েছিল। যদিও কালীপুজোয় ওই সব এলাকা তো বটেই, পাশাপাশি, শিউলি, মোহনপুর, রুইয়া, পাতুলিয়া, কেউটিয়া-সহ শহর ঘেঁষা পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে সব থেকে বেশি বাজির শব্দ শোনা গিয়েছে। ২০২৩ সালের অগস্টে ব্যারাকপুর ঘেঁষা দত্তপুকুরের মোচপোলে একটি বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ন’জনের মৃত্যু এবং ১২ জন আহত হওয়ার পরেই বেআইনি বাজি ধরার অভিযানে তৎপরতা বেড়েছিল পুলিশের। যদিও তা ছিল সাময়িক। অভিযোগ, এ বারও ওই এলাকার নারায়ণপুর ও বেরুনানপুকুরিয়ায় দেদার তৈরি হয়েছে শব্দবাজি। কালীপুজো উপলক্ষে পাড়া জুড়ে বসেছে বাজির হাট।
ব্যারাকপুরের নগরপাল মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘‘আমরা প্রচুর ধরপাকড় করেছি। বাইরে থেকে কেউশব্দবাজি এনে ফাটাতে পারেন। তবে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থানেওয়া হচ্ছে।’’