ভোপাল: দীপাবলির সন্ধ্যা। ভোপালের পলিটেকনিক এলাকায় আলজেনের বাড়িতে ভিড় জমিয়েছিল বন্ধুরা। এবার ও নাকি ‘পাইপ গান’ কিনেছে। বিকট শব্দ আর আগুনের ঝলকানি। পাড়ায় রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিল আলজেনের দেশি গান। বেশ কয়েকবার ফায়ারিং হওয়ার পর আচমকা আর কাজ করছিল না ‘বন্দুকটি’। কোথাও কিছু আটকে গেল না কি? নলের কাছে চোখ ঠেকিয়ে দেখছিল সাত বছরের খুদে। এমন সময় বিস্ফোরণ। যন্ত্রণায় চিৎকার করতে শুরু করে আলজেন। চোখ দিয়ে তখন সমানে রক্ত ঝরছে। একের পর এক এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল মধ্যপ্রদেশ। দীপাবলির ‘বেস্টসেলার’ কার্বাইড পাইপ গানের চক্করে ক্ষতিগ্রস্ত ১২২ জনের চোখ। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু।
১৯-২১ অক্টোবর। বিগত তিনদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১২২। মধ্যপ্রদেশের একাধিক হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে। কীভাবে ঘটছে এই দুর্ঘটনা? স্থানীয় বাজারে ১০০-২০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে এই কার্বাইড পাইপ গান। পাইপের মধ্যে ক্যালশিয়াম কার্বাইডের সঙ্গে জলের মিশ্রণে তৈরি হচ্ছে অ্যাসিটিলিন গাস। নীচের দিকে একটি লাইটার রয়েছে। সেখানে চাপ দিতেই আগুন আর বিকট শব্দ। আর এমন শব্দবাজি নজর কাড়ে অনেকেরই। কিন্তু মজাই সাজা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকসময় লাইটারে চাপ দিলেও ফায়ারিং হচ্ছে না। ঠিক তখনই তা নেড়েচেড়ে কিংবা উল্টো করে দেখছে খুদেরা। কেউ কেউ আবার নলে চোখ ঠেকিয়ে তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে। নাড়াচাড়ার ফলে আচমকাই গ্যাসের চাপ বেড়ে বিস্ফোরণ হচ্ছে। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চোখ। চিকিৎসকদের কথায়, এর জেরে দৃষ্টিশক্তি হারানোর প্রবল আশঙ্কাও রয়েছে।
ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমেছে পুলিশ-প্রশাসন। গোবিন্দপুরা, জামবুরি ময়দান, কারোন্দ কালান সহ একাধিক এলাকাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। পৃথক পৃথক চারটি টিম নিয়মিত টহলদারি চালাচ্ছে। শুধুমাত্র বেরাসিয়া এলাকা থেকেই ১৯টি কার্বাইড পাইপ গান বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।