• দুর্গাপুর গণধর্ষণ মামলা: চলতি মাসে চার্জশিট দিয়ে দ্রুত ট্রায়াল চাইছে রাজ্য, অভিযুক্তদের ডিলিট করা চ্যাট পুনরুদ্ধার করবে পুলিশ
    বর্তমান | ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল ও সংবাদদাতা, দুর্গাপুর: চলতি মাসেই চার্জশিট দিয়ে দুর্গাপুরের ডাক্তারি পড়ুয়ার গণধর্ষণ মামলার ট্রায়াল শুরু করতে চায় রাজ্য। এই মামলা নিয়ে রাজ্য সরকারের আ‌‌ইন বিভাগ ও পুলিশ চূড়ান্ত তৎপরতা দেখাচ্ছে। ইতিমধ্যেই পুরো ঘটনাক্রম পুলিশের কাছে স্পষ্ট হয়েছে। উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গণধর্ষণের পর নিজেদের ম঩ধ্যে পাঠানো পারস্পরিক হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট মুছে ফেলেছিল অভিযুক্তরা। এমনকী, কয়েকজন প্রভাবশালীর সাহায্য চেয়ে তারা মেসেজও করেছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সেই সব মেসেজও ফোন থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। সেগুলি উদ্ধারের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। আদালত আর্জি মঞ্জুর করেছে। অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হলে বিচারক জামিনের আর্জি খারিজ করে সোমবার পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।  

    বুধবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পুলিশ অভিযুক্তদের টিআ‌ই প্যারেডেরও আর্জি জানায়। নির্যাতিতাকে দিয়ে সহপাঠী ছাড়া বাকি পাঁচজনের টিআই প্যারেড করাতে চায় পুলিশ। বিচারক সেই আর্জিও মঞ্জুর করেছেন। শুক্রবার টিআই প্যা঩রেড করানো হবে বলে জানা গিয়েছে। অন্ধকার জঙ্গলে এই অপরাধ হয়ে থাকলে কীভাবে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করবেন নির্যাতিতা? এই প্রশ্নও উঠেছে। এবিষয়ে সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, অভিযুক্তদের কাছে স্মার্টফোন ছিল। যার আলো যথেষ্ট জোরালো। আমরা যত দ্রুত সম্ভব চার্জশিট দিয়ে দেশবাসীর কাছে ধর্ষণের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিতে চাই।

    এদিন নির্যাতিতার আইনজীবী পার্থ ঘোষ আদালত কক্ষে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, সহপাঠী ওয়াশিফ আলিই এই পুরো ঘটনার মাস্টারমাইন্ড। ফুচকা খাওয়ার নাম করে বান্ধবীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পূর্বপরিচিত কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এই অত্যাচার চালিয়েছে। যদিও এপ্রসঙ্গে অন্য কোনও পক্ষ মন্তব্য করেনি। উল্টোদিকে, ওয়াশিফ আলির আইনজীবী প্রজ্ঞাদীপ্ত রায় তাকে নির্দোষ দাবি করে অভিযুক্তর জামিনের আর্জি করেন। তখন সরকারি আইনজীবী নির্যাতিতার বয়ানকে হাতিয়ার করে এই অপরাধে তার ভূমিকা তুলে ধরেন এবং জামিনের তীব্র বিরোধিতা করেন। 

    আইনজীবী ও পুলিশ সূত্রের খবর, সহপাঠী জঙ্গলে সরাসরি ডাক্তারি পড়ুয়ার সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত না থাকলেও অতি ঘনিষ্ট অবস্থায় ছিল। তারপরই তিন দুষ্কৃতী সেখানে হাজির হয়। তখনই ওয়াশিফ পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। নির্যাতিতাও পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁকে এক দুষ্কৃতী ধরে ফেলে। তারপর মোবাইলের আলো জেলে একজন নির্যাতন চালায়। পুলিশ মূল অভিযুক্তকেও ইতিমধ্যে চিহ্নিত করে ফেলেছে। ডাক্তারি পরীক্ষা ও ফরেন্সিক রিপোর্টের জন্য তদন্তকারী অফিসাররা অপেক্ষা করছেন। তদন্তের স্বপক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ হাতে পাওয়ার পরই পুলিশ চার্জশিট দেবে বলে জানা গিয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)