• বঞ্চনা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল, পাল্টা তোপ বিজেপির
    আনন্দবাজার | ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ হামেশাই করে থাকে বিজেপি। বন্যায় বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের উদাসীনতার অভিযোগে এ বার সরব হল তৃণমূল কংগ্রেস।

    শাসর দলের তরফে অভিযোগ, বাংলায় ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার কারণেই অর্থনৈতিক ভাবে রাজ্যের শ্বাসরোধ করার ‘নিষ্ঠুর পরিকল্পনা’ করেছে বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ প্রসঙ্গে দেশের অন্য রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দেরও উল্লেখ করেছে তৃণমূল। বিজেপি অবশ্য বঞ্চনার অভিযাগ খারিজ করে উত্তরবঙ্গে বিপর্যয়ের জন্য পাল্টা শাসক দলের কাজকর্মের দিকেই আঙুল তুলেছে।

    এ রাজ্যের ন্যায্য প্রাপ্য আটকে দেওয়ার অভিযোগে দীর্ঘ দিন ধরেই বিজেপি সরকারকে নিশানা করছে তৃণমূল। এ বার বন্যা- বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে আর্থিক বঞ্চনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছে তারা। সমাজমাধ্যমে বুধবার তৃণমূল বলেছে, ‘মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকের বন্যায় এক হাজার ৯৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও উত্তরবঙ্গের বন্যার জন্য এক পয়সাও দেয়নি কেন্দ্র’! তৃণমূলের অভিযোগ, ‘অন্য রাজ্যগুলিকে এসডিআরএফ এবং এনডিআরএফ থেকে যথাক্রমে ১৩ হাজার ৬০৩ কোটি ২০ লক্ষ ও দুই হাজার ১৮৯ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হলেও সেই তালিকায় বাংলা নেই।’ তৃণমূলের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই বাংলাকে ভাতে মারা পরিকল্পনা করেছে মোদী-শাহেরা। সাধারণ মানুষ এর জবাব দেবেন।

    রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য তৃণমূলের অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘উত্তরবঙ্গের এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী তৃণমূলের সীমাহীন লোভ আর দুর্নীতি। আসলে উত্তরবঙ্গের মানুষ মুখ্যমন্ত্রীকেই প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ বার উত্তরবঙ্গে তৃণমূল খাতা খুলতে পারবে না!’’

    সাম্প্রতিক দুর্যোগে পাহাড় ও ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকা বানভাসি হয়েছে, ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। এবং এই বিধ্বস্ত এলাকার পুনর্গঠন নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের শাসক দলের মধ্যে শুরু থেকেই চাপানউতোর চলছে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ তদারকিতে গিয়ে বারবার কেন্দ্রীয় সরকারের উদাসীনতার অভিযোগ করেছেন। উল্টে দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গেলে দলের সাংসদ ও বিধায়কের উপরে হামলার অভিযোগে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। রাজ্য সরকার ও তৃণমূলকে বিঁধে শমীক এ দিনও বলেছেন, ‘‘এত বড় বিপর্যয়ের পরে উত্তরকন্যায় কন্ট্রোল রুম, হেল্প লাইন চালু করা হয়নি। উত্তরকন্যার বৈঠক ছিল লোক দেখানো। মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় বসে বিসর্জনের কার্নিভাল করেছেন!’’ দুর্যোগ-পীড়িত এলাকায় ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে সরকার ও শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তৃণমূলের আবার পাল্টা দাবি, বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের উত্তরবঙ্গের মানুষ সব সময়ে এলাকায় দেখেননি, মানুষের স্বার্থে তাঁরা ঠিকমতো কাজও করেননি। তাই তাঁদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)