কালীপুজোর পরের রাতেও বেলাগাম শব্দ-দৌরাত্ম্য বিধাননগর জুড়ে
আনন্দবাজার | ২৩ অক্টোবর ২০২৫
কালীপুজোর রাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন বাসিন্দারা। কালীপুজোর পরের দিন, মঙ্গলবারও একই অভিজ্ঞতা হল তাঁদের। ওই দিনও বিধি উড়িয়ে বেলাগাম ভাবে নিষিদ্ধ বাজি ফাটানো চলল বিধাননগরে। রাজ্য জুড়ে সর্বত্রই পুলিশ জানিয়ে দিয়েছিল, কালীপুজোর দিন রাত ৮টা থেকে ১০টা— শুধু এই দু’ঘণ্টা সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত সবুজ বাজি পোড়ানো যাবে। সেই নিয়ম অনুযায়ী, কালীপুজোর আগের বা পরের কোনও দিনই বাজি পোড়ানোর কথা নয়। যদিও সেই নিয়ম স্রেফ খাতায়-কলমেই রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
বিধাননগর, লেক টাউন, রাজারহাট ও নিউ টাউনের বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতেও বাজির শব্দে এবং ধোঁয়ায় টেকা দায় হয়ে উঠেছিল তাঁদের। গভীর রাত পর্যন্ত শব্দবাজি ফাটানো হয়েছে ইচ্ছে মতো। বিধাননগর কমিশনারেট এলাকার বহু জায়গাতেই বাজি-বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার রাতে আকাশে বেশ কিছু ফানুস ওড়ানোর ঘটনাও চোখে পড়েছে।
কালীপুজোর দিন সারা রাত দেদার বাজি ফাটানোর অভিযোগ উঠেছিল বিধাননগরের বিভিন্ন এলাকায়। যার মধ্যে নিউ টাউন, বিধাননগর, লেক টাউন-সহ বেশ কিছু এলাকায় ওই তাণ্ডব ছিল সর্বাধিক। নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোর নিরিখে নিউ টাউন কলকাতাকে রীতিমতো টেক্কা দিয়েছে বলেও অভিযোগ। পুলিশের দাবি, তারা অভিযোগ পেয়েই দ্রুত পদক্ষেপ করেছে। তবে, ছাদে বাজি ফাটানোর কিংবা রাত ১০টার পরে বাজি পোড়ানোর নিয়মকে যে ভাবে বুড়ো আঙুল দেখানো হয়েছে, তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের লাগাতার প্রচারেও যে বিশেষ সাড়া মেলেনি, গত দু’দিন ধরে দেদার বাজি ফাটানোর ঘটনাই তার প্রমাণ বলে মনে করছেন বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, বাজি যেখানে তৈরি হচ্ছে, সেখানে সমস্ত নিয়ম মানা হচ্ছে কিনা, তার উপরেও নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। না হলে কিছু জায়গা থেকে বাজি বাজেয়াপ্ত করা এবং কয়েক জনকে গ্রেফতার করে এই সমস্যা মিটবে না।
যদিও পুলিশের একাংশের দাবি, লাগাতার প্রচার ও নজরদারির জেরে কিছুটা সাড়া মিলেছে। কিন্তু রাতভর বাজি ফাটানো বন্ধ করা যায়নি। তবে, অভিযোগ এলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের অবশ্য প্রশ্ন, চার দিকে বাজি ফাটতে থাকলে কাকে ছেড়ে কাকে ধরবে প্রশাসন? ফলে, বিধাননগরে অন্যান্য বছরের মতো এ বারেও বাজির দাপট আটকাতে পারল না প্রশাসন।