সার্ভিস রোড জুড়ে উত্তর দমদম পুরসভার পরিত্যক্ত গাড়ি, বহু চিঠিতেও মেলেনি সুরাহা
আনন্দবাজার | ২৩ অক্টোবর ২০২৫
পরিকল্পনা ছিল, যানজট এড়াতে সরকারি জমির উপরে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা করা হবে। তার বদলে সেই জায়গায় পুরসভার পরিত্যক্ত গাড়ি জমা করে রাখা হচ্ছে। পরিত্যক্ত জলের গাড়ি, বর্জ্যের গাড়ি-সহ বিভিন্ন কিছুই রয়েছে সেখানে। বিমানবন্দরের অদূরে যশোর রোডের উপরে বিরাটি অভিমুখে সার্ভিস রোডের একাংশ উত্তর দমদম পুরসভার এই সব পরিত্যক্ত গাড়িতেই দখল হয়ে দীর্ঘদিন। পরিত্যক্ত আবর্জনার গাড়ি থেকে দুর্গন্ধ ছড়ানোয় পরিবেশ দূষণের অভিযোগও উঠছে। ফলে ক্ষুব্ধ পূর্ত দফতরও। তারাজানিয়েছে, উত্তর দমদম পুরসভাকে একাধিক বার বলা সত্ত্বেও পরিত্যক্ত ও ভাঙাচোরা গাড়িগুলি তারা সরায়নি। এ জন্য সার্ভিস রোডও ওই অংশে সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ বিধাননগর কমিশনারেটের ট্র্যাফিক বিভাগের।
বিমানবন্দরের দিক থেকে বারাসতমুখী যশোর রোডে গৌরীপুর কালীবাড়ির অদূরে রয়েছে ওই জায়গাটি। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, যশোর রোডের উপরে ওই মন্দিরে কালীপুজো দিতে বহু মানুষ গাড়ি নিয়ে আসেন। রাস্তার উপরে গাড়ি দাঁড় করানোয় যানজট হয়। দু’বছর আগে ওই যানজট কাটাতে এলাকায় ক্যামেরা বসিয়ে গাড়ির সংখ্যার হিসাব দেখেছিল পূর্ত দফতরের বারাসত ডিভিশন। সেই সংখ্যা আন্দাজ করে গৌরীপুর কালীবাড়ির অদূরে একটি জায়গা মন্দিরে আসা গাড়ির পার্কিংয়ের জন্য চিহ্নিত করে দেয় পূর্ত দফতর। তারা জানাচ্ছে, সেই সময়ে বিধাননগর কমিশনারেটের ট্র্যাফিক বিভাগকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, ওই জায়গায় মন্দিরে আসা গাড়ি রাখার জন্য। কিন্তু তার পরে কোনও অজ্ঞাত কারণে ওই জায়গায় মন্দিরে আসা গাড়িগুলি দাঁড় করানো যায়নি। পরবর্তী কালে সংশ্লিষ্ট পুরসভার পরিত্যক্ত গাড়ির আস্তানায় পরিণত হয়েছে জায়গাটি।
ওই সব পরিত্যক্ত গাড়ির কারণে সার্ভিস রোড সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়ছে বলেই অভিযোগ বিধাননগর কমিশনারেটের ট্র্যাফিক বিভাগের। তারা জানাচ্ছে, গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার জন্য তারাও উত্তর দমদম পুরসভাকে চিঠি লিখেছে। কিন্তু সে সব তারা সরায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে আসা কলকাতামুখী লরি ওই সার্ভিস রোড দিয়ে নিয়ে গিয়ে বাঁকড়া মোড় থেকে বিমানবন্দরের দিকে ঘোরানো হয়। তা ছাড়া সার্ভিস রোডে উভয় দিকেই গাড়ি চলাচল করে। সংশ্লিষ্ট পুরসভার পরিত্যক্ত গাড়িগুলি সার্ভিস রোডে পড়ে থাকায় ওই অংশে যানজট তৈরি হয়। আশঙ্কা থাকে দুর্ঘটনারও।
উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে অন্যত্র জায়গা না পাওয়ায় গাড়িগুলি ওখানে রাখা হয়েছে বলেই আমার মনে হয়। তা-ও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ যদিও পূর্ত দফতর ও পুলিশের দাবি, গাড়িগুলি বহু দিন ধরেই ওখানে রাখা আছে। এ নিয়ে একাধিক বার পুরসভার সঙ্গে চিঠি চালাচালি হলেও কোনও লাভ হয়নি।