• ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় ১৭টি ভারতীয় বইয়ের অনুবাদ প্রকাশিত হল জার্মান ভাষায়, তালিকায় বাংলাও
    আনন্দবাজার | ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বইমেলা হিসাবে খ্যাত জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট পুস্তকমেলায় বিভিন্ন ভারতীয় ভাষার ১৭টি বইয়ের জার্মান অনুবাদ প্রকাশিত হল। শিশুপাঠ্য এই ১৭টি বইয়ের মধ্যে একটি বাংলা বইও রয়েছে।

    ৭৭তম আন্তর্জাতিক ফ্রাঙ্কফুর্ট পুস্তক মেলায় এ বার উৎসাহের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল ‘ইণ্ডিয়া ন্যাশনাল স্ট্যান্ড’। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ স্বশাসিত সংস্থা ‘ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট’ এবং ফ্রাঙ্কফুর্টে ভারতের কনস্যুলেট জেনারেলের দফতরের যৌথ উদ্যোগে বইমেলায় ‘ইণ্ডিয়া ন্যাশনাল স্ট্যান্ড’ পরিচালিত হয়েছে। যার প্রতিপাদ্য বিষয়, ‘পড়ুন এবং ভারত সম্পর্কে জানুন’।

    জার্মানিতে ভারতের কনসাল জেনারেল শুচিতা কিশোর ভারতের ‘ইণ্ডিয়া ন্যাশনাল স্ট্যান্ড’ এবং ‘ইণ্ডিয়া স্টেজ’-এর উদ্বোধন করেছেন। অনুষ্ঠানে মাননীয় দেশি ও বিদেশি অতিথিদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল বুক ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মিলিন্দ সুধাকর মরাঠে। ভারতের পক্ষে এই বইমেলার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল ভারতীয় ভাষায় লেখা ১৭টি বইয়ের জার্মান অনুবাদ। বইগুলি বিভিন্ন ভারতীয় ভাষা থেকে জার্মানে অনুবাদ করেছেন অ্যাডেলে হ্যানিখ টেম্বে, সাবিনা মুলার, থমাস ভগেল, সাহিব কাপুর, জয়শ্রী হরি যোশী।

    অনুদিত বইগুলির তালিকায় রয়েছে ঐন্দ্রিলা মিত্রের লেখা এবং প্রণবেশ মাইতির অলঙ্কৃত ‘একটি গাছ একলা’। পুস্তক প্রকাশ কর্মসূচি এবং আলোচনাচক্রে শিক্ষাবিদ সাবিনা মুলার, থমাস ভগেল বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ভারতের কনসাল জেনারেল শ্রীমতী শুচিতা জানান, ভারতীয় এই শিশুপাঠ্য বইগুলির জার্মান অনুবাদ হওয়ার ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন প্রবাসী ভারতীয়দের সন্তানরা। তিনি বলেন, ‘‘ওরা দেশীয় সংস্কৃতির সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পাবে। শুধু মাত্র ভারতীয় এমন নয় বরং ইউরোপের মানুষেরাও ভারতীয় আচার, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবেন।’’

    ওই অনুষ্ঠানে ভারতের ১২টি প্রকাশনা সংস্থার প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। এছাড়াও ভারতের প্রায় ৯০টির বেশি প্রকাশনা সংস্থার একাধিক বই ভারতের মঞ্চে প্রদর্শিত হয়েছে। ন্যাশনাল বুক ট্রাস্টের একাধিক বাংলা বইয়ের পাশাপাশি রামকৃষ্ণ মিশনের চারটি বই— ‘উদ্বোধন ১২৫; স্মরণে- মননে- বিশ্লেষণে’, ‘রামকৃষ্ণ মিশন ১২৫’, ‘ধ্যানলোকে শ্রীমা সারদা দেবী’, ‘মহাবীর শ্রী হনুমান’ এই বইমেলায় প্রদর্শিত হয়েছে। বইমেলার ‘ইণ্ডিয়া স্টেজ’ মঞ্চে ভারতের তরফ থেকে একাধিক আলোচনাচক্রের আয়োজন করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, গ্রিস, ফিলিপিন্স, আলজ়িরিয়া, কলম্বিয়ার বিশিষ্টজনেরা তাতে যোগ দিয়েছেন।

    ভারত- ফিলিপিন্সের আলোচনা অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল কারণ ৭৭তম ফ্রাঙ্কফুর্ট পুস্তক মেলায় এ বারের অতিথি দেশ ছিল ফিলিপিন্স। জার্মান শিক্ষাবিদ রোমান মাইশ্ট, ম্যাথিয়াস কজ়াৎ, ভিক্টর গ্যাটিস ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, আয়ুর্বেদ, যোগ, বাস্তুশাস্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। ভারতীয় মঞ্চ নির্মাণের দায়িত্বে ছিল ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ডিজাইন (এনআইডি)। মিথিলা শিল্পকলার ভাবনাকে প্রাধান্য দিয়ে মঞ্চের নকশা পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখানে ভারতের জাতীয় পাখি ময়ূর এবং তার রঙের বৈচিত্র্যকে তুলে ধরা হয়েছে। ভারতের বহু অঞ্চলের একাধিক ভাষা, রীতিনীতি, সংস্কৃতি সেই বিচিত্র রঙের সমাহারের মধ্যে দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘ইণ্ডিয়া ন্যাশনাল স্ট্যান্ড’ এবং ‘ইণ্ডিয়া স্টেজ’-এ।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)